বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, নদীয়াঃ তিন মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর পেটে লাথি, নষ্ট করে দেওয়া হলে সন্তান, অভিযোগ করায় পুনরায় বাড়ি ভাঙচুর। দেওয়া হল প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি। রমজান মাসে আতঙ্কে ঘরছাড়া পরিবার। অভিযোগের তীর তৃণমূল পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যের বিরুদ্ধে। নদীয়ার শান্তিপুর থানার গয়েশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের টেংরি ডাঙ্গা এলাকার ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে খবর, তৃণমূল কর্মীরাই পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য হিসাবে ভোটে জয়যুক্ত করান স্থানীয় প্রসিদ্ধ ইঁটভাটার মালিক আনোয়ার হোসেন মন্ডলকে। অভিযোগ, ভোটে জেতার পর থেকে কর্মীদের খোঁজখবর তিনি রাখছিলেন না। ফলে কর্মীদের সঙ্গে বাড়ে দূরত্ব। কর্মীদের বিভিন্নরকম মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার অভিযোগও উঠে এসেছে। শান্তিপুর থানার গয়েশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মেদিয়ায় বাড়ি আনোয়ার হোসেন মন্ডলের। সাত বছর আগে ওই গ্রামে বিয়ে হয়ে এসেছেন টেংরি ডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা মান্নান শেখের মেয়ে সুলেখা খাতুনের। কর্মসূত্রে তার স্বামী বাইরে থাকেন। সেই কারণে সুলেখা খাতুন মাঝেমধ্যেই পাশের গ্রামে তার বাপের বাড়িতে যান। অভিযোগ, আত্মীয় না হয়েও আনোয়ার হোসেন মন্ডল ওই গৃহবধূর ওপর ফতোয়া জারি করে বাপের বাড়িতে না যাবার জন্য। কিন্তু সেই ফতোয়া মানছিলেন না সুলেখা খাতুন। গত ১৭ এপ্রিল গভীর রাতে আনোয়ার হোসেন মন্ডল লোকজন নিয়ে ওই গৃহবধূর বাপের বাড়িতে চড়াও হন।
সুলেখা খাতুনের দাদা বাদশা সেখ অভিযোগ করেছেন, ‘আমরাও তৃণমূল কংগ্রেস করি। কিন্তু আনোয়ার হোসেন মন্ডল তার রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোর জন্য গত ১৭ এপ্রিল রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ লোকজন নিয়ে আমাদের বাড়িতে চড়াও হয়। বাড়িতে আমার মা এবং বোন ছিল। বাড়িতে ঢুকে আমার মায়ের উপর অত্যাচার করে। আমার অন্তঃসত্ত্বা বোনের পেটে লাথি মারা হয়। আমার বোনকে তিনদিন হাসপাতালে ভর্তি রাখার পর তাঁর গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট হয়ে যায়। সেই বিষয়ে আমরা পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলাম। শুক্রবার অভিযোগ দায়ের করার পর রাত সাড়ে বারোটা নাগাদ আনোয়ার হোসেন মন্ডল তার দলবল নিয়ে বোমা পিস্তল সহ আমাদের বাড়িতে এসে ব্যাপক ভাঙচুর করে। গেট ভেঙে ভেতরে ঢুকে যায়। ভেতরের দরজা কোনোরকম বন্ধ থাকার কারণে আমরা প্রাণে বেঁচে যাই। আমরা ফের তার নামে অভিযোগ দায়ের করছি।’ অন্তঃসত্ত্বা মহিলার পেটে লাথি মেরে তার গর্ভস্থ সন্তান নষ্ট করে দেওয়ার ঘটনাকে চরম পাশবিক বলে আখ্যা দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের গয়েশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের স্বামী আমিরুল ইসলাম মন্ডল। তার বক্তব্য,’ এই ধরনের ঘটনা মানা যায় না। আবার সেই ঘটনার অভিযোগ দায়ের করার পর শুক্রবার রাতে তাদের বাড়িতে চড়াও হয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়েছে। এই পরিবারটি চরম আঙ্কের মধ্যে রয়েছে। তবে আইনের প্রতি আমাদের আস্থা আছে। যে এই কাজ করুক, আইন আইনের পথে চলুক।’
মান্নান শেখ বলেন রমজান মাসেও আতঙ্কের কারণ এ বাড়িতে ঢুকতে পারছি না পরিবার নিয়ে। যদিও এই ঘটনায় অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন মন্ডল কে একাধিকবার ফোন করলেও ফোন ধরেননি অভিযুক্ত আনোয়ার হোসেন।
Social