Breaking News

১৮ আগস্ট বালুরঘাটে পালিত স্বাধীনতা দিবস

রমা চ্যাটার্জি, বালুরঘাটঃ ১৯৪৭ সালের ১৫ আগষ্ট দেশ ভাগ হলেও পশ্চিমবঙ্গে অবিভক্ত পশ্চিম দিনাজপুর জেলার বালুরঘাট জেলা সদর স্বাধীনতা লাভ করে ১৮ আগষ্ট। সেদিনকে স্মরন করে বুধবার দক্ষিন দিনাজপুর হিন্দু মহাসভার উদ্যোগে বিকেল পাঁচটায় বালুরঘাট উচ্চবিদ্যালয়ের ময়দানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়।  জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন সেদিন বালুরঘাটের বীর স্বাধীনতা সংগ্রামী সরোজ চ্যাটার্জির নাতি তথা বালুরঘাটের বিশিষ্ট আইনজীবি সুশোভন চ্যাটার্জী। ১৯৪৭ সালে   টানা দু’দিন পাকিস্তানে  দখলে থাকার পর     ১৮ আগষ্ট বালুরঘাট স্বাধীন ভারতবর্ষে পরিনত হয়। সেদিন বিকেল পাঁচটায় স্বাধীনতা সংগ্রামী শরৎ চ্যাটার্জী বালুরঘাটে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে বালুরঘাটকে পরাধিনতার থেকে মুক্ত  করেন। 

১৯৪২ সালে ভারত ছাড়ো আন্দোলনে অন্যতম ভূমিকা নিয়েছিল বালুরঘাট। ইংরেজদের নাকের ডগা থেকে ছিনিয়ে নিয়ে তিনদিন বালুরঘাটকে স্বাধীন করে রেখেছিলেন সশস্ত্র বিপ্লবীরা। তবে তিনদিন পর থেকে ইংরেজরা বদলা হিসেবে বিপ্লবীদের ওপর চরম অত্যাচার শুরু করে। বহু বিপ্লবী সেইসময় কারাবন্দি যেমন হয়েছেন, তেমনি অনেকে আত্মগোপন করেছিলেন।

১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট বালুরঘাটবাসীর কাছে আনন্দের ছিল না। কারণ সিরিল রাডক্লিফের সীমানা বন্টনের সুপারিশে বালুরঘাট, মালদা, রায়গঞ্জের মতো শহরগুলিকে পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এই এলাকাগুলি নকশাল এড়িয়া অর্থাৎ ধারণাগত এলাকা বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তাই সেইসময় গোটা দেশে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হলেও বালুরঘাটে উঠেছিল পাকিস্তানের পতাকা। এই পতাকা উত্তোলন করেছিলেন বালুরঘাটের তৎকালীন মহকুমা শাসক পানাউল্লাহ। ১৪ অগাস্ট পাকিস্তান স্বাধীন হওয়ার দিনই বালুরঘাট ও সংলগ্ন এলাকাগুলির দখল নিয়েছিলেন পাক সেনারা।

পাকিস্তানের পতাকার আওতায় থাকতে রাজি ছিলেন না সেখানকার স্বাধীনতা সংগ্রামীরা। নানা যুক্তি-তর্ক পেশ করা হয়েছিল। এলাকার ভৌগোলিক চিত্র, জনসংখ্যার তথ্য সহ নানা অকাট্য যুক্তি পেশ করে শেষ পর্যন্ত মানতে বাধ্য করা হয় যে বালুরঘাটকে ভারতের মধ্যেই রাখতে হবে। অবশেষে ১৯৪৭ সালের ১৭ অগাস্ট বিকেলে পাক সেনারা বালুরঘাট ছেড়ে চলে যান। ১৮ অগাস্ট বালুরঘাটবাসী স্বাধীনতা দিবস পালন করেন। সেদিন ছিল তাঁদের কাছে মুক্তির দিন। ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সময় থেকে আত্মগোপন করে থাকা বিপ্লবীরা দীর্ঘ পাঁচ বছর পরে ১৮ অগাস্ট আত্মপ্রকাশ করেন। বিপ্লবী সরোজরঞ্জন চট্টোপাধ্যায় সহ আরও অনেকে সেখানে উপস্থিত হয়ে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। এরপর বালুরঘাটে একটি পরিক্রমাও করা হয়েছিল। সেদিনকে বুধবার শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরন করল হিন্দু মহাসভার সদস্যরা।পরে তারা একটি আলোচনা চক্রের আয়োজন করেন।তাতে জেলার বিশিষ্টব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

About Burdwan Today

Check Also

কার্তিক লড়াইকে ঘিরে জমজমাট কাটোয়া

রাহুল রায়, কাটোয়াঃ পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া শহরের সকলের কাছে সব থেকে বড় পুজো হল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *