টুডে নিউজ সার্ভিস, আসানসোলঃ করোনা মহামারীর কারণে দীর্ঘ এক বছরেরও অধিক সময়ে দেশে হাজার হাজার মানুষের যেমন প্রাণ হারিয়েছে। ঠিক তেমনই এই মহামারীর কারণে বহু মানুষের রুটি রুজিও পড়েছে টান। আর এই পরিস্তিতিতে প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও অসহায় হয়ে পড়েছেন সমাজের বহু অংশের মানুষই। তাদের কারোর কারোর মুখে জুটছেনা খাবার, কারোর আবার নেই অর্থ উপার্জনের কোন উপায়। আর এই অভাবের তাড়নায় অজান্তেই মিলিন হয়ে যাচ্ছে সমাজের বহু প্রতিভা ও প্রতিভাধর মানুষ। আর রবিবার এমনি এক ঘটনার সাক্ষী থাকলো আসানসোল শিল্পাঞ্চলের মানুষ। একসময় যার লেখা নাটক মঞ্চস্থ করে শুধু পশ্চিমবঙ্গই নয় সারা ভারতবর্ষের বিভিন্ন মঞ্চ থেকে বহু পুরস্কার নিয়ে এসেছেন শিল্পাঞ্চলের নাট্য গোষ্ঠীগুলি। আর সেই লেখক তথা নাট্যকার এখন লকডাউনের কারণে কাজ হারিয়ে একাকিত্ব এক ভ্রাম্যমান (ভবঘুরের) মতো জীবনযাপন করছেন। আর তার জেরেই বন্ধ হয়ে রয়েছে তার স্ক্রিপ্ট লেখার কাজ সমস্ত কাজই। মূলত কিছুটা অভিমানে, কিছুটা আবার অভাব অনটনে অনটনের জেরেই বলা যায়। আর সেই প্রতিভাবান মানুষটি হল নাট্যকার অরিন্দম সেনগুপ্ত। আসানসোল শহরের বুকে যিনি বাবাই নামেই বেশি পরিচিত।
এক সময়ে এই শহরেই রাসডাঙা অঞ্চলেরই বাসিন্দা ছিলেন তিনি। ছোট থেকেই ক্রিকেট খেলার প্রতি বিশেষ আকৃষ্ট ছিলেন তিনি, আর সেখান থেকেই পরবর্তী কালে আসানসোল শহরের বুকে ভালো ক্রিকেট হয়েও ওঠেন তিনি। সেখান থেকে পরবর্তী কালে নাটক লেখা শুরু করেন তিনি। তার লেখা বেশকিছু নাটক মঞ্চস্থ হবার পর তার সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে আসানসোল শিল্পাঞ্চলের পাশাপাশি রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে। শুধু তাই নয় নাটক লেখার পাশাপাশি বেশকিছু দিন তিনি বৈদ্যুতিন মাধ্যমের গ্রাউন্ড চ্যানেলে নাচ,গানের একটি রিয়ালিটি শো-এ নির্দেশনাও করেছেন৷ আর সেখান থেকেই তিনি যেটুকু উপার্জন করতেন তা দিয়েই কোন রকমে জীবনযাপন করতেন। এদিকে প্রথম লকডাউনের পর থেকে বিনোদন ক্ষেত্র থেকে বন্ধ হয়ে যায় রোজগার। আর রোজগার বন্ধ হবার কারণে ঘরভাড়া না দিতে পারায় কয়েক মাস রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে দিন কাটাতে হয় তাকে। পরে পরিচিত কয়েকজন ব্যাক্তির অনুরোধে বর্তমানে আসানসোল জেলা হসপিটালের রুগীর পরিবারের জন্য নির্মিত রাত্রী যাপন করার জায়গায় দিনযাপন করছেন তিনি।
সেখানে তার দিনে দিনে দুবেলা খাবার জুটছে বটে, কিন্তু সেখানে লেখার মতো পরিবেশ না থাকায় তার স্ক্রিপ্ট লেখার কাজ আপাতত বন্ধ। আর এই পরিস্থিতিতে আগামী দিনে তিনি আর নাটক লিকবেন কিনা তা তিনি নিজেও জানেননা।
এদিকে শিল্পাঞ্চলের নাট্য প্রেমী মানুষ,নাট্য কর্মীরা তার এমন অবস্থার খবর পেয়ে তার দিকে বাড়িয়ে দিয়েছেন সাহায্যের হাত। তারা সকলেই চান অরিন্দম বাবু আবারও পুরোনো ছন্দে ফিরে আসুক, মানুষের জন্য লিখুক আরো নাটক। আর নাট্য প্রেমীদের আশা করোনাকাল কেটে গেলে নাটক শুরু হলেই সবার আগে আবারও মঞ্চস্থ হবে লেখক অরিন্দম সেনগুপ্তের লেখা নাটক।
Social