জাতীয় স্তরের স্বর্ণপদক জয়ী রিংকু আজ পরিযায়ী শ্রমিক

Burdwan Today
2 Min Read

 

রমা চ্যাটার্জি, বালুরঘাটঃ পেটের টানে জাতীয় স্তরে রেকর্ড করা দক্ষিণ দিনাজপুরের স্বর্ণপদক প্রাপ্ত রিংকু বর্মন এখন পরিযায়ী শ্রমিক। জাতীয় রেকর্ড গড়লেও খোঁজ নেয়নি কেউ। অথচ সদ্য সমাপ্ত অলিম্পিক খেলে অন্যান্য  রাজ্যের পদক জয়ীরা অধিকাংশই গ্রামীন স্তর থেকে উঠে আসলেও তাদের নিজেদের গড়ে পিটে ওঠার ক্ষেত্রে সেই সব রাজ্য সরকারের বিরাট অবদান রয়েছে। অথচ দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুর ব্লকের অশোকগ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব বিষ্ণুপুরের বছর ২৬ এর রিংকু বর্মন  ছোট থেকেই খেলাধুলোয় পারদর্শী ছিলেন।

করোনা ভাইরাস ফুসফুসে আক্রমণ করে। কিন্তু, ফুসফুস নয়, পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে ওঠা রিংকু বর্মন চিন্তিত খালি পেট নিয়ে।  একমুঠো ভাতের জন্য করোনার ভয়কে উপেক্ষা করে আজ সব পদক ফেলে ছুটতে হচ্ছে ভিন রাজ্য গুজরাটে।

মরচে ধরা ট্রাঙ্ক খুলতেই বেরিয়ে এল একগুচ্ছ জং-ধরা মেডেল আর স্যাঁতসেতে একগাদা শংসাপত্র। সবই জাতীয় স্তরের। মেডেলগুলির মধ্যে চারটি সোনার। সেগুলো জড়ো করে ধরে আক্ষেপ রিঙ্কু বর্মণের, ‘‘সোনার মূল্য কে দেবে!’’ রিংকু বর্মনের বাবা বেচেঁ নেই, বোন আছে সে তাকে সাহায্য করে। মা আছেন,  সে অন্যের জমিতে কাজ করে কোনোমতে দিন গুজরান হয় তাদের। নিজের জমি বিক্রি করতে হয়েছে অভাব এর জন্য। যেহেতু রিংকু তার খেলাধুলোর ব্যাপারটা শিলিগুড়ি থেকে করেছিল। এদিকে জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাছে  রিংকু বর্মনের কোন রেকর্ড না থাকার দরুণ তাঁর বিষয়ে কোন খবরও জেলা ক্রীড়া সংস্থার কাছে নেই। যদি থাকত তবে জেলা ক্রীড়া সংস্থা নিশ্চই এমন একজন কৃতি খেলওয়াড়ের জন্য কিছু করে দেখাত বলে জেলা ক্রীড়া সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে।

হরিয়ানায় ২০০৯ সালে ন্যাশনাল ইন্টার জ়োনাল জুনিয়র অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপের অনূর্ধ্ব ১৬ বিভাগে ১ হাজার মিটার রিলে রেস ২ মিনিট ১.৪৯ সেকেন্ডে শেষ করে নতুন মিট রেকর্ড গড়েছিলেন রাজবংশী সম্প্রদায়ের অ্যাথলিট রিংকু। তার আগে পরেও জাতীয় সাফল্য রয়েছে আরও। কিন্তু সেই সোনার ছেলেই এখন আর্থিক অনটনে পরিযায়ী শ্রমিক হয়েছেন। পাশে দাঁড়াননি কেউ। খোঁজও নেননি। সাড়ে তিনশো টাকা দৈনিক রোজগারে সুদূর গুজরাতের সুরাতে এম্ব্রয়ডারির কাজ করেন তিনি। খেলাধুলো ছাড়তে হয়েছে বেশ কয়েক বছর হল।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *