Breaking News

কল্যাণী বই উৎসবে কবি ফারুক আহমেদকে সম্মাননা প্রদান

টুডে নিউজ সার্ভিস, কল্যাণীঃ সপ্তম বার্ষিক কল্যাণী বই উৎসবে লিটল ম্যাগাজিন উপসমিতির ব্যবস্থাপনায় “বুদ্ধদেব গুহ লিটল ম্যাগাজিন প্যাভিলিয়নে” স্বরচিত কবিতা ও গল্প পাঠের সঙ্গে আবৃত্তি পরিবেশনের অনুষ্ঠান  আয়োজিত হচ্ছে প্রতিদিন।

উক্ত অনুষ্ঠানে ২৩ নভেম্বর, ২০২১ স্বরচিত কবিতা পাঠের জন্য আন্তরিকভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয় কবি ফারুক আহমেদকে। লিটল ম্যাগাজিন উপসমিতির আহ্বায়ক অসিত মণ্ডল আমন্ত্রণ জানান কবি ও উদার আকাশ পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদকে। এদিন ২৩ নভেম্বর ছিল কবি ফারুক আহমেদ-এর জন্মদিন। কবিতা পাঠের পর অন্য সমস্ত কবিদের সঙ্গে এদিন কবি ফারুক আহমেদকেও সম্মাননা প্রদান করা হয় কল্যাণী বই উৎসব কমিটির পক্ষ থেকে। করোনা বিধিনিষেধ মেনেই চলছে উৎসব। 

কল্যাণী পৌরসভার সপ্তম বর্ষের প্রয়াস কল্যাণী বই উৎসব ইতিমধ্যেই জমে উঠেছে। সহযোগিতায় আছে কল্যাণী পাবলিক লাইব্রেরী। ২১ নভেম্বর ২০২১ রবিবার কল্যাণী বই উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন কথা-সাহিত্যিক নলিনী বেরা। এবছর কল্যাণী বই উৎসব মেতেছে নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে। 

লিটল ম্যাগাজিন প্যাভিলিয়নে আয়োজিত হচ্ছে কবি সম্মেলন, গল্পপাঠ, আবৃত্তি, আলোচনা সভা ইত্যাদি নানাবিধ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কবি ফারুক আহমেদ বলেন, “করোনা সংকট মানুষের সৃষ্টিকে থামিয়ে রাখতে পারে নি। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা কবি সাহিত্যিকদের নিয়ে  মহতী অনুষ্ঠান সুস্থ সংস্কৃতিকেই তুলে ধরছে।”

বই উৎসবের লিটল ম্যাগাজিন প্যাভিলিয়নে ২২ নভেম্বর শ্রদ্ধা জানানো হল সদ্য প্রয়াত কথাসাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহকে। বই উৎসব কমিটির সভাপতি ড. তাপস মণ্ডল সুন্দর স্মৃতিচারণা করলেন। উঠে এল বুদ্ধদেব গুহর স্ত্রী ঋতু গুহর প্রসঙ্গ। সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চক্রবর্তী স্মরণ করলেন সাহিত্যিককে। কোষাধ্যক্ষ বলরাম মাঝি মনে করালেন বিগত বছরে কল্যাণী বই উৎসব উদ্বোধনে আসা বুদ্ধদেব গুহর কথা। শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন কার্যকরী সভাপতি কিংশুক চক্রবর্তী। প্যাভিলিয়নে বাজানো হয় বুদ্ধদেব গুহর কণ্ঠে অনবদ্য পুরাতনী সংগীত। 

২৩ নভেম্বর কবিতা পাঠ করেন কবি ও উদার আকাশ পত্রিকার সম্পাদক ফারুক আহমেদ। প্রত্যেক কবিকে সম্মাননা প্রদান করা হয় বই উৎসব কমিটির পক্ষ থেকে। ফারুক আহমেদ-এর হাতে স্মারক তুলে দিলেন ‘নিরন্তর’ পত্রিকার সম্পাদক মনস্তত্ববিদ তটিনী দত্ত। এদিন উত্তরীয়, ফুল, মিষ্টি, কবি শঙ্খ ঘোষ ও সাহিত্যিক বুদ্ধদেব গুহকে উৎসর্গ করা সুন্দর স্মারক দিয়ে কবি ফারুক আহমেদকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এদিন অসাধারণ  আবৃত্তি পরিবেশন করেন কবি ও বাচিক শিল্পী ড. সীমা রায়।

 

বাংলাদেশের তথ্যচিত্র পরিচালক ও  আন্তর্জাতিক বাংলা ভাষা সংস্কৃতি-সমিতির বাংলাদেশ শাখার সভাপতি মাসুদ করিম আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন আন্তর্জাতিক বাংলা ভাষা সংস্কৃতি সমিতির ৯৯ নম্বর স্টলটি। উপস্থিত ছিলেন কলকাতা শাখার আহ্বায়ক ড. জয়ন্ত দাশগুপ্ত আরও অন্যান্য শাখার প্রতিনিধিরা।

ইতিমধ্যে কবিতা পাঠ করেছেন বর্ষীয়ান কবি অরুণ ভট্টাচার্য, শমিত মণ্ডল, পরিমল চন্দ্র মণ্ডল, সুখেন্দু বিকাশ মৈত্র, নিলয় নন্দী, সঞ্জিত দাস, চন্দন সাহা, দেবাশিস ঘোষ, শান্তনু দাস, হরিৎ বন্দোপাধ্যায়, বিমল কুমার দাস, সুদর্শন মণ্ডল, সোনালি ঘোষ, রণজয় মালাকার, চৈতালি বসু, জালাল উদ্দীন আহম্মেদ, কুশল মৈত্র, রিমলী বিশ্বাস, সানন্দা গাঙ্গুলী, তমালী দত্ত, কুশল মৈত্র, সুখেন্দু, বিশ্বজিৎ কর্মকার, তনিমা সাহা, সঞ্চিতা দে, নুপূর গাঙ্গুলী, মেঘনা চট্টোপাধ্যায়, সুশান্ত ঘোষ, কেশব রঞ্জন প্রমুখ। কবিতায় উঠে আসে প্রেম, প্রকৃতি, সমসময়। উঠে আসে অতিমারী শাসিত পৃথিবী।

বই উৎসবের লিটল ম্যাগাজিন উপসমিতির আহ্বায়ক অসিত মণ্ডল বলেন, “কল্যাণী বই উৎসব সুস্থ সংস্কৃতির পক্ষে। দেশজুড়ে মাথা চাড়া দিয়ে ওঠা অসন্তোষের আবহ, ধর্মীয় উন্মাদনা, সাম্প্রদায়িকতা, বিভাজন-এসবের বিরুদ্ধে মনুষ্যত্বের জয় সুনিশ্চিত করতে সাহিত্য- সংস্কৃতির সাধনাই একমাত্র পথ। আগামী দিনে কল্যাণী বই উৎসব আরও বেশী সংখ্যক মানুষকে এধরণের অনুষ্ঠানে সামিল করতে সচেষ্ট হবে।”

কল্যাণী বই উৎসব উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, বিধানচন্দ্র কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা। কল্যাণী বই উৎসবের এবছরের থিম ‘সাহিত্যে নদীয়া’। এই বই উৎসবের মেলায় ১০০টি বইয়ের স্টল সহ প্রায় ২৮১টি বিভিন্ন স্টল তৈরি করা হয়েছে। আছে পিঠে পুলি থেকে নানান খাবারের জন্য স্টল। নাগরদোলা থেকে শুরু করে আছে শিশুদের জন্য কীট জোন।

দীর্ঘ কোভিড কালীন মুহূর্ত কাটিয়ে শহর কল্যাণী মেতে উঠেছে বই উৎসবে।    কল্যাণী পৌরসভার পৌর প্রশাসক ড. তাপস মণ্ডল-এর উদ্যোগে অন্যমাত্রা পেয়েছে এবারের বই উৎসব।  

কল্যাণী বই উৎসবে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ১১৫ ও ১১৬ নং স্টল। স্বতন্ত্রভাবে সাজানো হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টলটি। স্টলের মধ্যে রয়েছে বাংলার মুখোশ প্রদর্শনী। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মানসকুমার সান্যাল ও কারামন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস ফিতে কেটে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টল উদ্বোধন করেন। উপস্থিত ছিলেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিমাই সাহা, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের আই কিউ এ সি-র অধিকর্তা অধ্যাপক নন্দকুমার ঘোষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক-অধ্যাপিকা, গবেষক, ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন। মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস জানান, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টলটিতে নতুনত্ব আছে। মুখোশের প্রদর্শনী নজর কাড়লো। উপাচার্য মানসকুমার সান্যাল জানিয়েছেন, এবারের আমরা আমাদের স্টলটিকে বেশ সাজিয়ে-গুছিয়ে তুলতে পেরেছি। বেশ কিছু নতুন নতুন বই প্রকাশ পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে, জয় খানে প্রদর্শিত হয়েছে। আগামী দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বতন্ত্রভাবে প্রকাশনা বিভাগ গড়ে তোলার চেষ্টা করা হবে। স্টলটি তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে রয়েছেন লোকসংস্কৃতি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. সুজয়কুমার মণ্ডল।

About Burdwan Today

Check Also

প্রকাশ্য রাস্তায় ফেলে যুবককে কুপিয়ে খুন, গ্রেফতার ১ মহিলা

টুডে নিউজ সার্ভিস, বর্ধমানঃ প্রকাশ্য রাস্তায় দিনে দুপুরে কুপিয়ে খুন এক ব্যক্তিকে। এক মহিলার হাতে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *