৮০ বছরের বৃদ্ধা বন্ধুর মাকে তুলতে কুয়োয় ঝাঁপ ৫৮ বছরের বয়স্কর

Burdwan Today
2 Min Read

নিখিল কর্মকার, নদীয়াঃ  শান্তিপুর শহরের তিলিপাড়া মনসাতলা আগাবাড়ী অতি সুপরিচিত শান্তিপুর বাসির কাছে। শনিবার দুপুর দু’টো নাগাদ, ওই বাড়ির নিমাই দাসের ৮০ বছরের বৃদ্ধা মা, বাড়ির উঠোনে সাবেকি ইঁদারায় কতটুকু জল আছে তা আগ্রহ বশত দেখতে যায় মুখ বাড়িয়ে, আর তখনি ঘটে বিপত্তি! নিমাইবাবু স্ত্রী গৃহকর্মে ব্যস্ত ছিলেন, হঠাৎ গোঙ্গনির শব্দে বাইরে এসে দেখেন শাশুড়ি মাতা গভীর ইঁদারার মধ্যে পড়ে গেছে! উদভ্রান্তের মত স্বামীকে এবং পরিচিত সকলকে ফোন করেন এবং পাড়া-প্রতিবেশীদের চেঁচিয়ে ডাকতে থাকেন। ছুটে আসে ১৩ জনের রেড ভলেন্টিয়ার টিম, তারাই দমকলে খবর দেয়! কাল বিলম্ব না করে দমকল এসে পৌঁছায়, ইতিমধ্যে নিমাইবাবুর প্রতিবেশী এক বন্ধু আশিস পাল ৫৮ বছর বয়সী ওই ভদ্রলোক, দমকল আসার আগেই নিজেকে দড়ি দিয়ে বেঁধে নেমে পড়ে কুয়ার মধ্যে, এরপর দমকল এবং রেড ভলেন্টিয়ার দের সহযোগিতায় ওই বৃদ্ধাকে কোলে তুলে নেয় আশিষ বাবু, চারিদিক থেকে সকলে দড়ি ধরে দু’জনকেই টেনে তোলে উপরে, এরপর শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেই সূত্রে জানা যায় ছোটখাটো কিছু আঘাত ছাড়া সুস্থ আছেন ওই বৃদ্ধা।

এ প্রসঙ্গে আশিষ বাবু বলেন, এর আগেও দু-একবার উদ্ধার করেছি ইঁদারার মধ্য থেকে, তবে তখন বয়স ছিল অল্প, এবারে আমার বর্তমান বয়স অনুযায়ী কাজটা হয়তো ঠিক হয়নি কিন্তু, বন্ধুর মাকে বাঁচানোর উদ্দেশ্যে ভুলে গিয়েছিলাম বয়স।

নিমাইবাবু জানান, পূর্বপুরুষের অনেক স্মৃতি আছে ওই  ইঁদারায়, বর্তমানে খুব বেশি ব্যবহৃত না হলেও বাপ ঠাকুরদার স্মৃতি হিসেবে নিয়মিত পরিষ্কার এবং উপরে ঢাকনা দিয়ে সযত্নে রাখা থাকে, হয়তো বেখেয়ালে আজ কিছুটা খোলা ছিল ঢাকনা! মাও খুব বেশি, কুয়োর পাড়ে যায় না! আজ দুর্ভাগ্যক্রমে ঘটে গেল দুর্ঘটনা।

রেড ভলেন্টিয়ার দের পক্ষ থেকে জানানো হয়, রোগীর পরিবারে খাদ্য ওষুধ প্রদান, রক্তদান, অক্সিজেন সরবরাহ, করণা মৃতদেহর শ্মশান যাত্রা সব অভিজ্ঞতা হয়েছিলো , বাকি ছিলো এই ধরনের কাজ। অত্যন্ত গর্ববোধ হচ্ছে। বিস্মিত হয়েছি  ঠাকুরমার ৮০ বছরেও, হার্টের জোর দেখে। ইঁদারার মধ্যে তাকালে  আমাদেরই হার্ট ফেল হয়ে যাওয়ার পরিস্থিতি!

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *