অতিমারীর কড়াল প্রভাবে ক্ষতির মুখে নবদ্বীপের ঐতিহ্যবাহী কাঁসা-পিতল শিল্প

Burdwan Today
2 Min Read

 

নিখিল কর্মকার, নদীয়াঃ করোনা অতিমারীর কড়াল প্রভাবে ও দীর্ঘ লকডাউন এর ফলে অভূতপূর্ব ক্ষতির মুখে নবদ্বীপের  ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন কাঁসা-পিতল শিল্প। ভগবান শ্রী চৈতন্যদেবের জন্ম ভূমি হওয়ার সুবাদে শহরের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে রয়েছে ছোট-বড় শতাধিক মন্দির ও ধর্মীয় স্থান, যার ফলে অতি পুরাতন এই মন্দির নগরীতে সারা বছরই ভিড় জমান দেশ বিদেশ থেকে ছুটে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীরা। ঐতিহ্যবাহী কাঁসা-পিতল শিল্পের পীঠস্থান হওয়ার কারণে এইসব বহিরাগত দর্শনার্থীদের কাছে খুবই জনপ্রিয় নবদ্বীপের কাঁসা-পিতলের তৈরি বাসনপত্র থেকে শুরু করে পূজার্চনার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় সামগ্রী, ফলে খোলা বাজারে চাহিদা থাকার কারণে এই শহরে বসবাসকারী বহু পরিবার কাঁসা পিতল শিল্পের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু মারণব্যাধি করোনা অতিমারীর প্রভাবে দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা লকডাউনের ফলে বর্তমানে প্রায় বন্ধ হতে বসেছে নবদ্বীপের ঐতিহ্যবাহী প্রাচীন এই শিল্প। পাশাপাশি লকডাউনের ফলে গণপরিবহন ব্যবস্থা বন্ধ থাকায় স্বাভাবিকভাবেই বহিরাগত দর্শনার্থীরা আসতে পারছেন না মন্দির নগরীতে। এছাড়াও বিভিন্ন কল কারখানা সহ ছোট-বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার কারণে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন বহু মানুষ। ফলে সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনে আর্থিক পরিকাঠামো আজ ভগ্নপ্রায় অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। ফলে কাঁসা পিতলের তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা কমতে শুরু করেছে খোলাবাজারে। যার কারণে প্রয়োজনের তুলনায় কম কাজ পাচ্ছেন এই শিল্পের সাথে জড়িত হস্ত শিল্পীদের, ফলে তার সরাসরি প্রভাব পড়েছে কাঁসা পিতল শিল্পের সাথে জড়িত মানুষজনদের অর্থনৈতিক জীবনে। 

    বর্তমানে ব্যবসার পরিস্থিতি খারাপ থাকায় ইতিমধ্যেই বহু মানুষ এই শিল্প থেকে সরে পেশা বদলাতে বাধ্য হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন স্থানীয় কাঁসা পিতল শিল্পীরা। সেই অর্থে এখনো পর্যন্ত প্রাচীন এই শিল্পের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে সরকারের পক্ষ থেকে কোন সাহায্য বা আশ্বাসবাণী না পেলেও ভবিষ্যতে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে যদি সরকার থেকে কোনরকম সাহায্যের হাত বাড়িয়ে না দেয়া হয় তাহলে একটা সময় এই শিল্প সম্পূর্ণভাবে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাবে বলেও দাবি করেছেন স্থানীয় কাঁসা-পিতল শিল্পীরা।  এছাড়াও অতিমারি কাটিয়ে কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে সেই দিনের জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া এই মুহূর্তে তাদের আর কিছুই করার নেই বলেও হতাশার সুরে জানিয়েছেন নবদ্বীপের কাঁসা পিতল শিল্পীরা ।।।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *