গৌরনাথ চক্রবর্ত্তী, কাটোয়াঃ চৈত্র মাসের শেষে গাজনে মেতে ওঠে রাঢ় বাংলা। জৌলুস অনেক ফিকে হয়ে গেলেও আজও টিকে আছে বোলান গান। আগে পুর্ববঙ্গ ও একই সময়ে মেতে উঠতো নীল পূজার আয়োজনে। দেশ ভাগের পর পুর্ব বঙ্গ থেকে আগত মানুষের সাথে এই বাংলায় চলে আসেন নীল ঠাকুরও। আগে চৈত্র মাসে বাড়ি বাড়ি নীল সন্যাসীরা নীল ঠাকুর নিয়ে ঢাক বাঁশি সহযোগে গাইতেন নীলের গান, অষ্টক গান। শিব-দূর্গা-কালি-রাধা-কৃষ্ণ সহ বিভিন্ন সঙ সেজে নেচে নেচে পরিবেশন করতেন বিভিন্ন পালা। বিগত ১০-১৫ বছর আগেও এর প্রচলন অল্প বিস্তুর দেখা গেলেও বর্তমানে প্রায় লুপ্ত হতে বসেছে বাংলার লোকসংস্কৃতির এক অন্যতম শিল্প নীল নাচ, কাঁচনাচ, অষ্টক গান।
এবছর নীল পূজার রাতে পূর্ব বর্ধমানের কাটোয়ার পানুহাট বারুজীবিপল্লী শিবপূজা কমিটি হারিয়ে যাওয়া কাঁচ নাচকে পুনরায় চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এবছর নিল পুজোর রাতে রাত ১১টা থেকে শিব মন্দির চত্ত্বরে অনুষ্ঠিত হলো নীল নাচ, কাঁচ নাচ। যা দেখতে মন্দির চত্ত্বরে ভিড় উপচে পড়ে। নীল পূজা কমিটির সদস্য উৎপল পাল জানালেন আমরা পুরনো শিল্পী ও নতুন প্রজন্মের উৎসাহ দেখে অভিভূত। আগামীতে সকলের সহোযোগিতা পেলে পুর্বের মতো নীল পূজার আগে পাঁচ রাত এই লোক সংস্কৃতি কাঁচ নাচ আমরা করবো। দর্শক হিসেবে উপস্থিত শিক্ষক হীরক বিশ্বাস জানালেন, বঙ্গ সংস্কৃতির প্রাচীন ও ঐতিহ্যপূর্ণ নীল নাচ, হরগৌরী নাচ, রাধাকৃষ্ণ নাচ, কালী নৃত্য, ভাল্লুক নৃত্য, ভূত নৃত্য, মহিষাসুরমর্দিনী নাচের মাধ্যমে যে হারিয়ে যাওয়া কাঁচনাচ শিবপুজা কমিটি আবারও ফিরিয়ে দিলো। আশা করবো ভবিষ্যতে ও তারা এই সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখবে।
Social