জ্যোতিপ্রকাশ মুখার্জ্জী, মঙ্গলকোটঃ আহত হনুমানকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলো পশ্চিম মঙ্গলকোটের গণপুর গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার সকালে একটি আহত হনুমান হাজির হয় গ্রামের বাসিন্দা ডলি মুখার্জ্জীর বাড়িতে। সাংসারিক কাজে ব্যস্ত ডলি দেবী অনুভব করেন কেউ তার পোশাক ধরে টানছে। মুখ ঘুরে তাকিয়ে দেখেন একটি হনুমান। হঠাৎ হনুমান দেখে ঘাবড়ে গিয়ে আত্মরক্ষার তাগিদে ডলি দেবী হাতের বালতি নিয়ে হনুমানটির দিকে তাক করলে সেটি মানুষের মত দু’হাত তুলে বলতে চায় তাকে যেন আঘাত করা না হয়।
ডলি দেবী বুঝতে পারেন হনুমানটি আহত। তার মাথার বামদিকে একটি আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান। তার নড়াচড়ার ক্ষমতা ছিল না। সঙ্গে সঙ্গে তিনি হনুমানটির পরিচর্যা শুরু করেন। তাকে পানীয় জল খাওয়ান। হাতে তুলে দেন আলু ও কলা। খাবার খাওয়ার কিছুক্ষণ পর হনুমানটি সুস্থ বোধ করে। এদিকে খবর দেওয়া হয় গুসকরা বনদপ্তরে। খবর পেয়েই দ্রুত তারা ঘটনাস্থলে এসে আহত হনুমানটি উদ্ধার করে নিয়ে যায়। আপাতত হনুমানটির প্রাথমিক চিকিৎসা করে তাকে নজরে রাখা হয়েছে।
ডলি দেবী বলেন, প্রথমে আমি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। যখন বুঝতে পারি হনুমানটি আহত তার পরিচর্যা শুরু করি। হনুমানটির দুর্বলতা দেখে মনে হচ্ছে সে কয়েকদিন ধরে অভুক্ত ছিল। বাড়িতে দেওর ছিল। সে সঙ্গে সঙ্গে গুসকরা বনদপ্তরের সঙ্গে যোগাযোগ করে। আমি চাই অবলা প্রাণীটি যেন দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠে।
ডলি দেবীর ভূয়সী প্রশংসা করে গুসকরা বনদপ্তরের আধিকারিক সমীরণ মুখার্জ্জী বলেন, এইসব অবলা প্রাণীদের প্রতি আমরা যদি একটু সহানুভূতিশীল হই তাহলে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় থাকে। সাধারণ মানুষের কাছে তার আবেদন বন্যপ্রাণীদের আঘাত না করে বনদপ্তরে খবর দেওয়া হলে অবশ্যই তারা সেটি উদ্ধার করবে। পাশাপাশি কথা হচ্ছিল দত্তপুকুরের পশুপ্রেমী কলেজ ছাত্রী অদিতি গায়েনের সঙ্গে। সে বলল, একটি অসুস্থ বন্যপ্রাণীর পরিচর্যার জন্য যেভাবে সাধারণ মানুষ এগিয়ে এসেছে সেটা সত্যিই প্রশংসনীয়। বনদপ্তরকেও ধন্যবাদ। প্রসঙ্গত অদিতির সৌজন্যে ইতিমধ্যে স্থানীয় এলাকায় অসংখ্য সাপ ও বন্যপ্রাণী তাদের জীবন ফিরে পেয়েছে।
Social