নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর মহানিষ্ক্রমণের ঘটনা

Prabir Mondal
3 Min Read

টুডে নিউজ সার্ভিসঃ মঙ্গলবার ১৬ জানুয়ারি ঐতিহাসিক মহানিষ্ক্রমন দিবস। ১৯৪১ সালের ১৬ জানুয়ারী মধ্য রাতে এই দিনেই সুভাষচন্দ্র ছদ্মবেশে গৃহত্যাগ করেন।শিশির বসু বর্ণিত মহানিষ্ক্রমণ গল্প অনুযায়ী নেতাজি মধ্যরাতের (১২টা)পরে গোমো স্টেশনে আসেন এবং কালকা মেলে করে দিল্লি যান।সুগত বসুর বই অনুযায়ী কালকে মেলে দিল্লি পৌঁছানোর পর সেখান থেকে উনি ট্রেন বদল করে ফ্রন্টিয়ার মেলে চড়েন এবংপেশোয়ার পৌঁছানঅসঙ্গতি ১: কালকা মেল ৪০ দশকে গোমো পৌঁছাত রাত ১০.৪৫ মিনিটে।১৫ মিনিট দাঁড়িয়ে ১১টায় গোমো ছাড়ত।তাই রাত ১২ টার পর গোমো স্টেশনে এসে ট্রেন ধরা সম্ভব নয়।রাত ১০টাকে উনি রাত ১টা বলে ভুল করছেন এটা মেনে নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।কারণ গল্প অনুযায়ী রাতের খাবার খেয়ে ধীরে সুস্থে ধানবাদ থেকে গাড়ি চালিয়ে গোমো আসার বর্ণনা আছে।এমনকি গাড়ি থামিয়ে গল্প করার কথাও বলা আছে কারণ ট্রেন নাকি গভীর রাতে গোমোতে আসে! বোধহয় শিশিরবাবু গল্প লেখার সময় পুরোনো সময়সূচী দেখতে ভুলে গিয়েছিলেন। নতুন টাইম টেবিল দেখে গল্প লিখছিলেন।অসঙ্গতি ২: সুগতবাবুও টাইম টেবিল দেখে বই লেখেন নি।তাই এবার গোলমাল।কালকা দিল্লি পৌঁছানোর ১৫ মিনিট আগেই ফ্রন্টিয়ার মেল দিল্লি ছেড়ে পেশোয়ারের উদ্দ্যেশ্যে রওনা দিতো।অর্থাৎ কালকা মেল ধরে দিল্লি এসে ফ্রন্টিয়ার মেল ধরা সম্ভব নয়।তার জন্য ২৪ঘন্টা দিল্লির স্টেশনে বসে থাকতে হবে।যেটা অবাস্তব পরিকল্পনা। অর্থাৎ এটাও একটা মিথ্যে।একজন রেলওয়ে গবেষকের সৌজন্যে আমি পুরোনো টাইমটেবিল পাই।চাইলে আপনারা ও মিলিয়ে নিতে পারেন সময়সূচি।পুরোটাই শিশিরবাবুর বানানো গল্প।পুনশ্চঃ ফৈজাবাদের গুমনামি বাবার ঘর থেকে একটি কাগজ পাওয়া যায়,যাতে লেখা ছিল শিশিরবাবু নেতাজিকে দেশ ছাড়তে সাহায্য করেছিলেন। লেখাটি একটি পেনের দাগ দিয়ে কেটে দেওয়া এবং তাতে গুমনামি বাবা লিখেছেন “He is a liar”এটা যদি মিথ্যে হয় তাহলে সত্যিটা কি? বাংলা থেকে পেশোয়ার যাবার একমাত্র সরাসরি ট্রেন ছিল পাঞ্জাব মেল।সম্ভবত বোলপুর থেকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাথে দেখা করার পর বর্ধমান স্টেশন থেকে এই পাঞ্জাব মেলেই সরাসরি পাকিস্তানে পৌঁছান নেতাজি। উত্তমচাঁদের পুরোনোলেখাতে ও পাঞ্জাব মেল ও বর্ধমান স্টেশনের উল্লেখ পাওয়া যায়।রবীন্দ্রনাথের সাথে দেশত্যাগের আগের রাতে গোপনে দেখা করার কথা গুমনামি বাবা তাঁর অনুগামীদের কাছে বলেছিলেন।

“ওই মহামানব আসে” বইটিতে উল্লেখ আছে।নেতাজির দেশত্যাগের কথা আবেগে রবীন্দ্রনাথ তাঁর ‘বদনাম’ গল্পে লিখলেন কয়েক মাসের মধ্যেই। গল্পটির শেষ অংশে পরিষ্কার একজন বিপ্লবীর দেশত্যাগের কথা বলা যার খবর নিরুদ্দেশ হবার ১৪ দিন পরে খবরের কাগজে বেরোয় এবং তিনি আফগানিস্তানের পথ ধরে হাঁটছেন! এটি পরিষ্কার নেতাজির রেফারেন্স।তিনি যে আফগানিস্তান হয়ে দেশ ছাড়ছেন সেটা তখন ব্রিটিশ গোয়েন্দারাও জানেন না।এদিকে রবীন্দ্রনাথ জানেন! সুভাষ-রবীন্দ্রনাথ সেই গোপন বৈঠকে কি আলোচনা হয়েছিল আর কবিগুরু কিভাবে দেশনায়ককে সাহায্য করেছিলেন সেটা হয়তো কোনো দিনই আমরা জানতে পারবো না।।

তথ্য ও ছবি নেট থেকে সংগৃহীত

TAGGED:
Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *