টুডে নিউজ সার্ভিসঃ বেতন নিয়ে যখন কোনো সমস্যা নেই তাহলে এসএসসি ভবনের সামনে এই আন্দোলনের যৌক্তিকতা কি? এসএসসি ভবন রাতভর ঘেরাও করে চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের আন্দোলন প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর সুরেই এই প্রশ্ন তুললেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এসএসসি চাকরি হারাদের পাশে আছে একথা উল্লেখ করে শিক্ষামন্ত্রীর মন্তব্য “আপনারা আপনাদের কাজ করুন। আর আমাদেরকে আমাদের কাজ করতে দিন। এমন কোন কাজ করবেন না যাতে সুপ্রিম কোর্টের রিভিউ পিটিশনকে দুর্বল করে, আদালত অবমাননার কাজ হয়।”
মূলতঃ সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশনকে বর্ম করে এবং হাইকোর্টের আদালত অবমাননার অভিযোগকে সামনে রেখে এস এস সি ভবনের সামনে চাকরি হারাদের রাতভর অবস্থান ঘেরাও কর্মসূচি বন্ধ করতে চায় রাজ্য সরকার বলেই মনে করা হচ্ছে। একদিকে মেদিনীপুর কলেজ ময়দান থেকে মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন ” কারাযোগ্য আর কারা অযোগ্য তা দেখার কথা নয় শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। রাজ্য সরকার তাদের যথাসময়ে যথাযথ বেতন দিচ্ছে, বেতন দেওয়ার কাজ রাজ্যের এবং রাজ্য সরকার সে ব্যাপারে নিশ্চয়তা দিয়েছে। তাই শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উচিত স্কুলে ফিরে গিয়ে কাজ করা। আইনি বিষয়, যোগ্য ও অযোগ্য যাচাই করা এ সমস্তই রাজ্য সরকার করছে। যাদের প্ররোচনায় এই বিক্ষোভ আন্দোলন হচ্ছে তারাই চাকরি খেয়েছে, আমরা চাকরি খাইনি। আমরা চাকরি দিয়েছি। যোগ্য অযোগ্যের বিষয় নিয়ে আন্দোলনকারীদের মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই।”
মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের সুরে সুর মিলিয়ে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী চাকরিহারাদের পাশে আছেন। সুপ্রিম কোর্ট ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কাজ চালিয়ে যেতে বলেছে। রাজ্য সরকার বেতন নিশ্চিত করেছে। সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য সরকার রিভিউ পিটিশন করছে, আইনি লড়াই লড়ছে। তা সত্ত্বেও রাজ্যের কাজে বাধা দিয়ে কার লাভ হচ্ছে? ” রাজ্য সরকার তো মামলায় হেরেছে, কিন্তু জিতল কারা? সেটা ভাবতে হবে। এ ধরনের হটকারিতা করা উচিত নয়।” পাল্টা প্রশ্ন শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসুর। শিক্ষামন্ত্রী আরও জানিয়েছেন চাকরিহারা প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক শিক্ষিকা ও অশিক্ষক কর্মীদের মধ্যে ১৭ হাজার ২০৬ জন যোগ্য চাকরিপ্রার্থী আছেন। কিন্তু এই যোগ্য চাকরি হারাদের তালিকা প্রকাশ্যে আনার পক্ষে নন শিক্ষামন্ত্রী। তার দাবি” সুপ্রিম কোর্ট কোথাও যোগ্য অযোগ্য দের তালিকা প্রকাশ্যে আনার নির্দেশ দেয়নি। এসএসসি এই তালিকা তৈরি করে শিক্ষা দপ্তরকে দিতেই পারে। সেই অনুযায়ী শিক্ষা দপ্তর কাজ করবে। কিন্তু এর সঙ্গে যারা শিক্ষক-শিক্ষিকা হিসেবে কাজ করছেন তাদের কি প্রয়োজনীয়তা?” যদিও আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বক্তব্য ” সুপ্রিম কোর্ট একটা সাময়িক সমাধানের পথ দেখিয়েছে। কিন্তু আমরা যারা যোগ্যতার সঙ্গে চাকরি পেয়েছি তারা স্থায়ী সমাধান চাই। তাই কারাযোগ্য আর কারা অযোগ্য এই পৃথকীকরণের তালিকাটা প্রকাশ্যে আনা জরুরি। রাজ্য সরকার সেই তালিকা প্রকাশ্যে আনতে পিছু হটছে কেন?”