টুডে নিউজ সার্ভিসঃ ভুয়ো ভোটার ধরতে অবশেষে এবার ময়দানে নির্বাচন কমিশন। শাসক থেকে বিরোধী সকলের গলাতেই যখন মিলে গিয়েছিল একটাই স্বর এই ভুয়ো ভোটার কার্ডকে কেন্দ্র করে তখন রীতিমতো প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছিল নির্বাচন কমিশনের স্বচ্ছতা নিয়ে। অবশেষে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগের পর ময়দানে নির্বাচন কমিশন। এতদিন পর্যন্ত জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছেই দেশের সব ভোটারের বিস্তারিত তথ্য জমা থাকতো এবং তা দেখতে পেত একমাত্র নির্বাচন কমিশনই। এই প্রথম নির্বাচন কমিশন এক নতুন পদ্ধতিকে আনলো সামনে যা ব্যবহার করতে পারবে দেশের প্রত্যেক রাজ্যেরই। একই এপিক নাম্বার যদি এক রাজ্যের সঙ্গে আরেক রাজ্যের মিলে যায় তাহলে প্রথমে দেখা হবে সেই এপিক নাম্বার কোন রাজ্যের প্রথমে ছিল। প্রথম যে রাজ্য ওই এপিক নাম্বার ব্যবহার করেছিল সেই রাজ্যকে কিছুই করতে হবে না। পাশাপাশি অন্য যে রাজ্যের এপিক নম্বর এই রাজ্যের এপিক নাম্বারের সঙ্গে মিলে গিয়েছিল সেই রাজ্যকেই এবার পরিবর্তন করতে হবে নির্দিষ্ট সেই এপিক কার্ডের নাম্বার। একই রকম ভাবে যদি অন্য রাজ্যের কোন এপিক কার্ডের নম্বরের সঙ্গে এই রাজ্যের এপিক কার্ডের নম্বর মিলে যায় তাহলে এই রাজ্যেরই সেই নম্বরকে পরিবর্তন করে নতুন নম্বর তৈরি করতে পারবেন একমাত্র সেই ক্ষমতা এবার প্রথম নির্বাচন কমিশন দিল যা এর আগে কখনও কোনোদিন হয়নি। এর ফলে এপিক কার্ডের নম্বর নিয়ে নম্বর নিয়ে শাসক থেকে বিরোধীদের তোলা অভিযোগ সবকিছুই এক নিমেষে শেষ হতে চলেছে বলেই নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর।
নির্বাচন কমিশন এই নির্দেশ দিয়েছে সোমবার ১৭ মার্চ গোটা দেশ জুড়ে। পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন এই নির্দেশও দিয়েছে দ্রুততার সঙ্গে সব এপিক কার্ড খতিয়ে দেখতে হবে এবং চলতি মাসেই অর্থাৎ মার্চ মাসের মধ্যেই এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর এই ক্ষেত্রে কেবলমাত্র সেই সমস্ত এপিক কার্ড নতুন নম্বর হবে যাদের এপিক কার্ডের নম্বরের সঙ্গে অন্য রাজ্যের নম্বর মিলে গিয়েছিল। ভোটার আই কার্ডে সোজা দিকে থাকবে নতুন এপিক নাম্বার এবং পিছন দিকে থাকবে পুরনো এপিক কার্ডের নাম্বার। কারণ এতদিন পর্যন্ত এই এপিক কার্ডের নম্বর নির্দিষ্ট ওই ব্যক্তিই সব জায়গায় ব্যবহার করে এসেছেন যাতে ভবিষ্যতে কোনো রকম অসুবিধা না হয়। তাই নতুন এপিক কার্ডের পিছন দিকে পুরনো এপিক কার্ডের নম্বর থাকবে বলে নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর। সোমবার রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তর থেকে সব জেলা শাসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই বার্তাই দিয়েছেন রাজ্যের ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক দিব্যেন্দু দাস। তিনি জানান নির্বাচন কমিশন যে নির্দেশ দিয়েছে তা অবিলম্বে দ্রুততার সঙ্গেই পালন করতে হবে এবং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। পাশাপাশি প্রত্যেক জেলার স্বীকৃত রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত বৈঠক করতে হবে, তাদের অভিযোগগুলো ভালো হতো শুনে সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ করতে হবে। ভোটার তালিকা থেকে মৃত ভোটারের নাম বাদ দেবার ক্ষেত্রেও এদিন আবারো মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তর থেকে জেলাশাসকদের ফের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেই নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর।
এখন দেখার বিষয় শাসক থেকে বিরোধী সকলেই যখন ভুয়ো ভোটার কার্ড নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় করে দিয়েছিল রাজ্য রাজনীতিতে তখন নির্বাচন কমিশনের এই নির্দেশ রাজ্যের মানুষের কতটা মন জয় করতে সক্ষম হয়। আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের এই পদক্ষেপ যে এক বড় আকার নেবে তা বলার অপেক্ষায় রাখে না