জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী, বর্ধমানঃ গত কয়েক বছর ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে সেইভাবে বৃহৎ শিল্প গড়ে ওঠেনি। অনুকূল পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও এই রাজ্যের সমস্যা অন্যরকম। জনঘনত্ব বেশি হওয়ার জন্য বৃহৎ শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় অধিক পরিমাণ জমি একলপ্তে পাওয়া যায় না। আবার যন্ত্রের ব্যবহার বেশি হওয়ার জন্য বৃহৎ শিল্পে কর্মসংস্থান আশানুরূপ হয় না।
সবদিকে নজর রেখে গত কয়েক বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের দিকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছে। তার সুফলও পাওয়া গেছে। পরপর দেশের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছে এই রাজ্য। এই সাফল্যকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে সরকারের নির্দেশে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে আয়োজিত হচ্ছে ‘শিল্পের সমাধানে এম.এস.এম.ই’ শিবিরের। লক্ষ্য এই শিল্পের সঙ্গে যুক্তদের উৎসাহ দেওয়া।
সরকারি নির্দেশ মেনে গুসকরা পুরসভার পরিচালনায় ৯ ডিসেম্বর পৌরসভা প্রাঙ্গনে শিল্পের সমাধানে এম.এস.এম.ই শিবিরের আয়োজন করা হয়। এই শিবিরে জুয়েলারি, কাঁথা স্টিচ, খাদ্য সহ ৬ টি স্টল করা হয়। আগামী ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে বৈকাল ৪টে পর্যন্ত শিবির খোলা থাকবে এই শিবির।
এদিন উপস্থিত কয়েকশো মহিলার করতালির মধ্যে দিয়ে শিবিরের উদ্বোধন করেন গুসকরা পুরসভার চেয়ারম্যান কুশল মুখার্জ্জী। প্রথমদিন শুরুতে ভিড় যথেষ্ট থাকলেও প্রতিকূল আবহাওয়ার জন্য ভিড় পরে কমে যায়।
পৌরসভার চেয়ারম্যান ছাড়াও শিবিরে উপস্থিত ছিলেন গুসকরা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ ড. সুদীপ চ্যাটার্জি, সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পূর্ব বর্ধমান জেলার সহ নির্দেশক মণিকাঞ্চন গাঙ্গুলি সহ একাধিক কাউন্সিলার, পৌরসভার কর্মীরা এবং ভাইস চেয়ারম্যান বেলী বেগম ও অন্যান্যরা।
শিবিরে স্টল করা অর্পিতা দেবী বললেন, সারাবছর অনলাইনে জিনিসপত্র বিক্রি করি। তবে এই ধরনের শিবির হলে বিক্রি যেমন বাড়ে তেমনি পরিচিতিও বাড়ে। ফলে ভবিষ্যতে বিক্রি বাড়বে। অন্যান্যরাও তার সঙ্গে সহমত প্রকাশ করেন। তবে সবচেয়ে বেশি ভিড় ছিল পকোড়ার স্টলে।
মণিকাঞ্চন বাবু এই শিবিরের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করেন এবং আশা প্রকাশ করেন আগামী দিনে এই শিল্প আয়ের পথ দেখাবে। পাশাপাশি তিনি বলেন, রাজ্য সরকার এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের সমস্ত রকম সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত আছে। গুসকরা মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ তার প্রতিষ্ঠানে এইধরনের শিবিরের আয়োজনে ইচ্ছে করার পাশাপাশি আগ্রহী ছাত্রছাত্রীরা যাতে এই শিবিরে অংশগ্রহণের সুযোগ পায় তারজন্য চেয়ারম্যানের কাছে মৌখিকভাবে অনুরোধ করেন।
রাজ্য সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে চেয়ারম্যান বলেন, যেভাবে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে তাতে আমার স্থির বিশ্বাস আগামীদিনে মানুষ এর থেকে আয়ের পথ খুঁজে পাবে।
