টুডে নিউজ সার্ভিস, বর্ধমানঃ বর্ধমান শহরের প্রায় ৩০০ বিঘা জমির উপর জলাভূমি শশাঙ্ক বিল ভরাটের চেষ্টার অভিযোগে শোরগোল। বাসিন্দাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই একটি অসাধু চক্র এই জলাভূমিকে ভরাট করার চেষ্টা করছে। কয়েকদিন ধরে রাতের অন্ধকারে আবার জলাভূমি ভরাট করার চেষ্টা চালাচ্ছে। জেসিবি মেশিন নিয়ে রাতে সেখানে জলাশয় ভরাটের কাজ হচ্ছে। এই জলাশয় ভরাটের বিষয়টি যাতে প্রকাশ্যে না আসে সেজন্য এলাকায় বহিরাগত কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। বিলের চারপাশে পর্দা দিয়ে ঢাকা দেওয়া হয়েছে। চুপিসারে জলাশয় ভরাট করা নিয়ে ক্ষোভ বাসিন্দাদের মধ্যে।
হাইকোর্টের নির্দেশে বিতর্কিত শশাঙ্ক বিলের জমির চরিত্র বদল করা হয়েছে। কিন্তু অভিযোগ, হাইকোর্টের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে জমির চরিত্র বদলের যে দাবি করছে পুরসভা, তাতে বিস্তর গলদ রয়েছে। ২০১৪ সালের ৮ মার্চ পুরসভার চেয়ারম্যান একটি নির্দেশিকা জারি করেন। যার মেমো নং ১৯২/১২ আই, তারিখ ০৮-০৩-২০১৪। সেখানে পরিষ্কারভাবে উল্লেখ রয়েছে, হাইকোর্টের আইনজীবীর সাপ্লিমেন্টারি এফিডেভিট অনুযায়ী পুরসভার যে নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে তাতে জালিয়াতি করা হয়েছে। এফিডেভিট থেকে পরিষ্কার, নো-অবজেকশন সার্টিফিকেটে চেয়ারম্যানের সই জাল করা হয়েছে। পাশাপাশি ফলস মেমো নম্বরও বসানো হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গড়েন। তার সদস্য ছিলেন তৎকালীন এগজিকিউটিভ অফিসার, পুরসভার সচিব, ল’ অফিসার ও আবরান প্লানার। কমিটিকে দ্রুত তদন্ত করে রিপোর্ট পেশ করতে বলা হয়। শুধু তাই নয়, পুরসভার চেয়ারম্যান ১০ মার্চ জেলা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিককে একটি চিঠি দেন। সেই চিঠিতে চেয়ারম্যান পরিষ্কার জানিয়েছেন, পুরসভার তরফ থেকে কোনো নো-অবজেকশন সার্টিফিকেট দেওয়া হয়নি এবং সার্টিফিকেটে তাঁর যে সই রয়েছে সেটি জাল। তিনি কোনো চিঠিতে সই করেননি। নো-অবজেকশন সার্টিফিকেটের মেমো নম্বরটিও জাল। পুরসভায় এধরনের বিষয় নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি। এরপর চেয়ারম্যান নো-অবজেকশন সার্টিফিকেটের বিষয়ে তাঁর তীব্র আপত্তির কথা জেলা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আধিকারিককে জানান।
মঙ্গলবার সেই জলাভূমি পরিদর্শন করতে আসেন বর্ধমান পৌরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক বিশ্বজিৎ ঘোষ সহ পৌরসভার অনান্য আধিকারিকরা সেখানে উপস্থিত হয়ে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ দেন পৌরসভা। জেলাশাসকের সাথে মিটিংয়ের পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান পৌরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার।
পৌরসভার চেয়ারম্যান পরেশচন্দ্র সরকার জানান, ২১৫ দাগ নম্বর নিয়ে আমাদের বলার কিছু নেই, কারণ ওটা ওদের কেনা। ২১২, ২১৪ সেই অংশে ওরা এখন কাজ করবে না, যতক্ষণ না জেলা শাসক মহাশয়া কোনো সিদ্ধান্ত জানাবেন। আমরা কাজ বন্ধ রাখতে বারণ করেছি একটাই কারণে সেটা ওদের সাথে আমাদের কাগজের কোনো মিল পাচ্ছি না।
জেলা ভূমি সংস্কার দপ্তরের আধিকারিক বিশ্বজিৎ ঘোষ জানান, যে বিল টা নিয়ে কথা হচ্ছে সেটা এক সময় হাইকোর্টের নির্দেশে শালী হয়েছে। শালী হওয়ার পর থেকে সেটা হাউজিং কমপ্লেক্স হয়েছে। বর্তমানে এই জায়গার চরিত্র ১৪ দাগ শালী, ১২ দাগ শালী, ১৩/৫১ দাগ সেটা কিছুটা বিল আর কিছুটা শালী। আপাতত চেয়ারম্যানের নির্দেশ মোতাবেক কাজ বন্ধ থাকলো, পরে পৌরসভা ওনারা ওনাদের রিপোর্ট দিক আমরা আমাদের রিপোর্ট দেবো বৈঠক হলে।
Social