জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জীঃ খবরে প্রকাশ আগামী ৩ রা জুলাই থেকে জিও তার মোবাইল নেটওয়ার্কের খরচ বৃদ্ধি করতে চলেছে। জানা যাচ্ছে এই বৃদ্ধির হার সাড়ে বারো শতাংশ থেকে পঁচিশ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। এই দুর্মূল্যের বাজারে সাধারণ মানুষের খরচ বাধ্যতামূলকভাবে বেড়ে গেল। সৌজন্যে কেন্দ্র সরকারের কর্পোরেট প্রীতি।
বর্তমান কেন্দ্র সরকারের বক্তব্য ব্যবসা করা সরকারের কাজ নয়। তাদের কাজ জনগণের মঙ্গল করা, উন্নয়নমূলক কাজ করা। খুব ভাল কথা। যদিও কথায় ও কাজে নুন্যতম মিল নাই। যাইহোক, পিছন থেকে সাধারণ মানুষের পিঠে ছুরি মেরে সরাসরি কর্পোরেট সেক্টরদের প্রচুর মুনাফা পেতে সাহায্য করাটাও কেন্দ্র সরকারের কাজ হতে পারেনা! অথচ গত কয়েক বছর ধরে বর্তমান কেন্দ্র সরকার এই কাজটাই করে চলেছে।
বর্তমান কেন্দ্র সরকার র্যাশন কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে শুরু করে সব কিছুর সঙ্গে মোবাইল নাম্বার সংযোগ বাধ্যতামূলক করেছে। এতে সাধারণ মানুষের সেভাবে লাভ হয়নি। অথচ প্রয়োজন না থাকলেও একজন গরীব মানুষ প্রতিমাসে মোবাইল সিম রিচার্জ করতে বাধ্য হচ্ছে। সরাসরি বলা ভাল সরকার বাধ্য করছে।
সরকারের এই হিটলারি সিদ্ধান্তের ফলে একজন গরীব মানুষ প্রতিমাসে দেড় শতাধিক অর্থ মোবাইলের পেছনে ব্যয় করতে বাধ্য হচ্ছে। কারণ প্রায় প্রতিটি কোম্পানির মোবাইল রিচার্জের নুন্যতম খরচ দেড় শতাধিক টাকা।
সমস্যায় পড়বে তারাও পেশার তাগিদে যারা দুটি সিম ব্যবহার করতে বাধ্য হয়। তাদের খরচ দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। এখন বেশ কিছু ক্ষেত্রে অনলাইনে পড়াশোনা হয়। যে বাড়িতে একাধিক সন্তান আছে তাদের খরচ আরও বেড়ে যাবে।
দেশে সবচেয়ে বেশি গ্রাহক আছে জিও কোম্পানির। এই কোম্পানির মালিকের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সম্পর্ক মোটামুটি সবার জানা। ফলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে জিও কোম্পানি। এরপর অন্যান্য কোম্পানিগুলো খরচ বাড়াবে।
মনে করা হচ্ছে ৫ জি পরিষেবা চালু করার জন্য এই খরচ বৃদ্ধি। অথচ কোম্পানি তার ৪ জি পরিষেবা ভাল করে দিতে পারেনা। সারাদিন ধরে নেটওয়ার্কের গতি খুবই দুর্বল থাকে। সন্ধ্যার পর থেকে কার্যত নেট স্তব্ধ হয়ে যায়। এটা নিয়ে নিয়মিত সমাজ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশিত হয়। কোম্পানির গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে ফোন করলে একটাই উত্তর – ৫ জি পরিষেবা চালু করার জন্য সমস্যা হচ্ছে। অনেকটা- সোজা পায়ে চলতে পারেনা, এদিকে এক পা আলতা! চালু করতে গেছে ৫ জি। দিনের পর দিন তারা সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে চলেছে এবং তাতে মদত দিয়ে চলেছে কেন্দ্র সরকার। ফলে পরিষেবা না পেলেও প্রতিকারের কোনো উপায় নাই।
সেক্ষেত্রে একটা উপায় ছিল সরকারি সংস্থা বিএসএনএলের পরিষেবা উন্নত করে সেটা কম খরচে সবার ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা।
কথা হচ্ছিল সত্তর বছরের বৃদ্ধ মঙ্গলকোটের চাঁদ হেমরমের সঙ্গে। লোকের জমি চাষ করে সংসার চলে। মোবাইলের রিচার্জ খরচ বৃদ্ধির কথা শুনে আঁতকে উঠে বললেন – এর থেকে দগ্ধে দগ্ধে না মেরে সরকার আমাদের সরাসরি মেরে দিলে ভাল করত।
শুধু চাঁদ নয় তার মত অনেকের মনেই ক্ষোভ বাড়ছে। অথচ সরকারের এসব দিকে কোনো ভ্রূক্ষেপ নাই।
Tags district Politics west bengal
Check Also
বাঘ গুনতে সুন্দরবনে বসছে ১৪৪৪টি ক্যামেরা
টুডে নিউজ সার্ভিসঃ বাঘের সংখ্যা জানার জন্য আবার সুন্দরবনের জঙ্গলে বসতে চলেছে ক্যামেরা। প্রতিবছর শীতের …
Social