টুডে নিউজ সার্ভিস, বর্ধমানঃ টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে দক্ষিণবঙ্গেরর একাধিক জেলা জলমগ্ন৷ তার উপর ডিভিসি জল ছাড়ায় পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়। দামোদর, ময়ূরাক্ষী, অজয়-সহ রাজ্যের একাধিক নদীর জল উপচে পড়েছে। বহু রাস্তাঘাটের উপর দিয়ে বইছে নদীর জল। ভেঙেছে সেতু। বিপর্যস্ত জনজীবন। গত সপ্তাহেই বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছেন মমতা। কথা বলেছেন সাধারণ মানুষের সঙ্গে। এই পরিস্থিতি জন্য ডিভিসিকেই দায়ী করেছেন তিনি। অপরদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে জেলা প্রশাসনকে সব রকম বন্দোবস্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এই বিষয় নিয়ে কয়েকদিন আগেই কেন্দ্রকে দুষেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সম্প্রতি, দুদিনের বন্যা কবলিত জেলা সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সোমবার বর্ধমানে বন্যার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে প্রশাসনিক বৈঠক করেন তিনি৷ জেলাশাসকের কনফারেন্স হলে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। জেলাশাসক, পুলিশ সুপার সহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তি ও বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধিরা বৈঠকে থাকেন। এই বৈঠকের মূল উদ্দেশ্য, কতটা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা দেখা, কতটা ত্রাণ বিলি হয়েছে, আরও কতটা ত্রাণ প্রয়োজন, এসবের রূপরেখা তৈরি করা।
সেই বৈঠক শেষ করেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে জেলার বন্যা পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায। তিনি বলেন, ‘‘ডিভিসি যদি আবার জল ছাড়ে তাহলে আমি এবার কড়া ব্যবস্থা নেব৷ এই বন্যা রুখতে আরও সক্রিয় হতে হবে৷ ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা শস্য বীমার টাকা পাবে৷ আবার বৃষ্টি হলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে তাই এই বিষয়টি নিয়ে প্রশাসনের তরফ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷ এই পরিস্থিতিতে দুর্গতদের জন্য সরকার যেমন করছে, পুলিশও অনেক জায়গায় কমিউনিটি কিচেন করেছে। আমাদের দলের পক্ষ থেকেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যেখানে যেখানে বন্যা হয়েছে, আমরা সেখানে সেখানে সাধ্যমতো শুকনো খাবারের প্যাকেট দিচ্ছি। কেউ যেন বঞ্চিত না হয়, তা আমাদের দেখতে হবে। আমি বিধায়কদের বলেছি, তাঁদের কোটার যে টাকা আছে, তা দিয়ে গ্রামীণ রাস্তাগুলো যতটা পারবেন করুন। আমাদের দলের সাংসদদের কাছেও একই অনুরোধ করব। তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা এখন ২৪ ঘন্টা বন্যা পরিস্থিতির উপর নজর রাখি। সকলের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। আমরা অনেকগুলো বন্যা সেন্টার তৈরি করেছি। কিন্তু তাতেও বাধ মানছে না। বাঁধ ভাঙছে। দরকার হলে স্কুলগুলোকে যাতে কাজে লাগাতে পারি, তা দেখতে হবে। পূর্ত দফতরকে বলা হয়েছে যে সব রাস্তা ভেঙেছে তা সমীক্ষা করে দেখতে। ডিসেম্বরে ১১ লক্ষ পাকা বাড়ি করার জন্য সরকার টাকা ছাড়বে। পঞ্চায়েত দফতরকেও বলা হয়েছে জল কমলেই যেন সমীক্ষার কাজ শেষ করে।’’