Breaking News

শস্যবিমাতেও দুর্নীতি! ভুয়ো কৃষক দেখিয়ে শস্যবিমার টাকা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ

দেবজিৎ দত্ত, বাঁকুড়াঃ নিজস্ব জমি না থাকা সত্ত্বেও ২২ জনকে ভুয়ো কৃষক হিসাবে দেখিয়ে শষ্যবীমা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ, অন্যদিকে গ্রামের প্রকৃত কৃষকদের জমির পরিমাণ কমিয়ে তাঁদের নামমাত্র শষ্যবীমা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বাঁকুড়ার ছাতনা ব্লকের হাউসিবাদ গ্রামের এই ঘটনা সামনে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে কৃষি দফতর। অভিযোগ পাওয়ার পরই শুরু হয়েছে তদন্ত।

গত কয়েকবছর ধরে এ রাজ্যের কৃষকরা খারিফ ও রবি মরসুমে নিজেদের শষ্যবীমা করার সুযোগ পাচ্ছেন। দুটি মরসুমে পৃথক পৃথক ভাবে নিজেদের চাষযোগ্য জমির বিবরণ সহ শষ্যবীমা করার জন্য ব্লক স্তরের কৃষি দফতরে আবেদন জানান কৃষকরা। সেই আবেদনের তথ্য যাচাই করে কৃষি দফতর তা পাঠিয়ে দেয় বীমা সংস্থার কাছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতেই রাজ্য সরকার বীমার প্রিমিয়াম জমা করে সংশ্লিষ্ট বীমা সংস্থায়। আবহাওয়া বা অন্য কোনো কারনে ফসলহানী হলে সরাসরি বীমা সংস্থা কৃষকের ব্যাঙ্ক একাউন্টে বীমার টাকা জমা করে। চলতি বছর আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় বাঁকুড়ার ছাতনায় মার খেয়েছে খারিফ মরসুমের আমন চাষ। বৃষ্টির অভাবে বহু জমিতে ধান রোপণের কাজই করতে পারেননি ওই ব্লকের কৃষকরা। সেই কারনে সম্প্রতি বীমা সংস্থার তরফে ছাতনা ব্লকের কৃষকদের শষ্যবীমার টাকা পাঠানো শুরু হয়েছে। আর তার শুরুতেই বড়সড় বেনিয়মের অভিযোগ সামনে এসেছে। ছাতনা ব্লকের হাউসিবাদ গ্রামের কৃষকদের একাংশের অভিযোগ গ্রামের প্রকৃত কৃষকরা যে পরিমাণ জমির তথ্য আবেদনের সঙ্গে জমা দিয়েছিলেন তা ইচ্ছাকৃত ভাবে কমিয়ে দিয়েছে কৃষি দফতর। ফলে বীমার নামমাত্র টাকা পেয়েছেন তারা।

অন্যদিকে গ্রামের যে সমস্ত কৃষকদের নিজস্ব জমি নেই তাঁদের অ্যাকাউন্টে মোটা অঙ্কের বীমার টাকা ঢুকছে। গ্রামবাসীদের দাবি যাদের জমি নেই তাদের আবেদনে হয় অন্যের জমি অথবা ভুয়ো জমির তথ্য দিয়ে বীমার মোটা অঙ্কের টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি শুধু একটি গ্রামেই ২২ জনকে ভুয়ো কৃষক হিসাবে দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা পাইয়ে দেওয়া হলে গোটা ছাতনা ব্লকে দুর্নীতির বহর কতটা তা আন্দাজ করাই মুশকিল। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই স্থানীয় বিডিও, জেলা শাসক এমনকি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। এরপরও ঘটনার তদন্ত করে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে আগামীতে আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গ্রামবাসীরা। গ্রামবাসীরা যাদের ভুয়ো কৃষক বলে দাবী করেছেন তাদের কারো সাফাই তিনি ভাগচাষী আবার কারো সাফাই সবটাই চক্রান্ত। অভিযোগ পেতেই কৃষি দফতর তদন্ত শুরু করেছে। কৃষি দফতরের যুক্তি যাদের ভুয়ো কৃষক বলা হচ্ছে তারা কেউই ভুয়ো কৃষক নয়। তাদের কারো নিজস্ব জমি রয়েছে, কেউ আবার ভাগচাষী। ভাগচাষীরা গ্রাম পঞ্চায়েতের কাছ থেকে সংশাপত্র সংগ্রহ করে তা বীমার আবেদনের সাথে যুক্ত করেছিলেন। এরপরও যদি কোনো গন্ডগোল হয়ে থাকে তাহলে তার দায় বীমা সংস্থার। একই দাবী করেছেন ছাতনা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিও।

About Prabir Mondal

Check Also

বাঘ গুনতে সুন্দরবনে বসছে ১৪৪৪টি ক্যামেরা

টুডে নিউজ সার্ভিসঃ বাঘের সংখ্যা জানার জন্য আবার সুন্দরবনের জঙ্গলে বসতে চলেছে ক্যামেরা। প্রতিবছর শীতের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *