Breaking News

বর্ষা এলেই আতঙ্কে প্রহর গোনে আতকুলা

 

অর্পণ নন্দী, কাটোয়াঃ বর্ষা এলেই আতঙ্কে প্রহর গোনেন মঙ্গলকোটের আতকুলা গ্রামের বাসিন্দারা। অজয় ঘেরা ছোট্ট গ্রামটি যে বাঁধে ভরসায় বেঁচে আছে। সেটি দিনে দিনে ক্ষয় হচ্ছে। ক্রমশ অজয় এগিয়ে আসছে গ্রামের দিকে। গ্রামবাসীর দাবি, বাঁধের বেশ কিছুটা অংশ একেবারে ভেঙে গিয়েছে। পরপর দু’বার বর্ষায় বানভাসি হতে হয়েছে। তারপরেও বাঁধ সংস্কারে আশ্বাস ছাড়া প্রশাসনের কাছ থেকে কিছুই মেলে না। মঙ্গলকোটের বিডিও জগদীশচন্দ্র বারুই-এর আশ্বাস ওই গ্রামে বাঁধের অবস্থা খারাপ। বিষয়টিকে নিয়ে সেচ দপ্তরে চিঠি দিয়েছি। আশা করি সমস্যা মিটবে। মঙ্গলকোটের ভাল্যগ্রাম পঞ্চায়েতের আতকুলা গ্রামে প্রায় ১৭০-১৮০ ঘর বাসিন্দা রয়েছেন। গ্রামে ভোটারের সংখ্যা সাড়ে চারশর বেশি। পাশ দিয়ে  বয়ে চলেছে অজয়। 

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দু-হাজার সালে বন্যায় ভেসে গিয়েছিল গ্রাম। পরের বছরও গ্রামের ভেতরে জল ঢুকেছিল। দিনে দিনে বাঁধের অবস্থা অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠেছে। কোথাও বাঁধের গায়ে মাটি ধসে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। আবার কোথাও বাঁধ ক্রমশ সরু নিচু হয়ে গেছে। বাসিন্দারে আশঙ্কা, বর্ষায় অজয় জল বাড়লেই গ্রামে প্লাবিত হবে। তাদের দাবি, ২০০০ সালে শেষ বার বাঁধ সংস্কার হয়েছিল। তারপর থেকে আবেদন করা হলেও কাজ হয়নি। হাতকুলা গ্রামে পরামানিক আতকুলা গ্রামে প্রামানিক পাড়া থেকে কোটালপাড়া পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার বাঁধ অত্যন্ত বেহাল হয়ে আছে বলে জানিয়েছেন তারা।

গ্রামের বাসিন্দা সঞ্জয় থান্দার, নীলকমল মাঝিরা বলেন, অজয়ের বাঁধে দশা দেখে আমাদের রাতে ঘুম কেড়ে নিয়েছে। পারে মাটি ক্রমশ অজয় গিলছে। তারা জানান, বর্ষা এলেই রাত জাগতে হয়। কখন বাঁধের গায়ে জল ঠেকছে নজর রাখতে হয়। দ্রুত বাঁধ বোল্ডার দিয়ে বাঁধানো দাবি করেছেন তারা। না হলে গ্রাম বাঁচানো যাবে না।

আর  এক বাসিন্দা ধানু মাঝি বলেন, জল গ্রামে ঢুকলেই আমাদের বাশের বড় মাচা করে থাকতে হয়।বারি হারানোর ভয়ে ঘুম আসেনা। বহুবার প্রশাসনকে জানিয়ে কোনো লাভ হয়নি। বাঁধের বেশ কিছু জায়গায় যাতায়াতের জন্য কাটা রয়েছে, ফলে বাঁধ দুর্বল হয়ে গেছে, কিছু জায়গায় আবার বাঁধে বড় গর্ত তৈরি হয়েছে।

পাশের গ্রামের বাসিন্দা দেবকুমার ধারা জানান, এই গ্রামে গা ঘেঁষেই অজয় বাঁক নিয়েছে। যার ফলে জল বাড়লে বাঁধের গায়ে ক্রমশ ধাক্কা খায়। দু বছর আগে প্লাবিত হওয়ায় গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ি ভেঙে গেছে। কয়েকজন বাড়ি আবার অজয়ে তলিয়ে যায়। চাষের জমিও নষ্ট হয়েছে। কিন্তু সেচ দপ্তরের কোন হেলদোল নেই। শুধু পরিদর্শন করে দায় সারছে তারা, অভিযোগ গ্রামবাসীন্দাদের।

মঙ্গলকোটে বিধায়ক অপূর্ব চৌধুরী বলেন, ওই গ্রামে বাঁধ যাতে উপযুক্ত  ভাবে মেরামত হয় তা নিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। সেচ দপ্তরের কাটোয়া মহকুমার সহকারী বাস্তকার তারকনাথ মিশ্রের দাবি, তারা সংবাদমাধ্যমকে এ বিষয়ে কিছু জানাতে পারবেন না।

About Burdwan Today

Check Also

কার্তিক লড়াইকে ঘিরে জমজমাট কাটোয়া

রাহুল রায়, কাটোয়াঃ পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া শহরের সকলের কাছে সব থেকে বড় পুজো হল …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *