স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে অভিনব প্রদর্শনী

Burdwan Today
2 Min Read

 


অভিজিৎ হাজরা, আমতা, হাওড়াঃ আমতার উদং উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে শুরু হয়েছে  “স্বাধীনতা সংগ্রামে আমতা-বাগনান” শীর্ষক প্রদর্শনী। প্রদর্শনীর আয়োজক আমতার ইয়েস মিশন। প্রদর্শনী চলবে ১৬ আগস্ট পর্যন্ত। ইয়েস মিশন-এর পরিচালক প্রদীপ রঞ্জন রীত জানালেন – “ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে সামিল হয়েছিলেন আমতা বাগনান এলাকারও বহু দেশপ্রেমিক মানুষ। তাঁদের সেই বিস্মৃতপ্রায় বীরত্ব, ত্যাগ ও সংগ্রামের কথা নূতন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরা ও তাদের মধ্যে দেশপ্রেমের মূল্যবোধ জাগিয়ে তোলাই আমাদের উদ্দেশ্য।  ইতিহাসের পাঠ্যপুস্তকে আমাদের ঘরের পাশের স্বাধীনতা যোদ্ধাদের কথা  লেখা থা না তাঁরা হলেন আনসাং হিরো।” তাঁদের স্মরণ করা আমাদের কর্তব্য। প্রদর্শনীটির উদ্বোধন করেন রাষ্ট্রপতি পুরস্কার প্রাপ্ত শিক্ষক সুচন্দন পোড়েল।উপস্থিত ছিলেন হাওড়া জেলা ইতিহাস ও লোকসংস্কৃতি গবেষণা কেন্দ্রের সম্পাদক সায়ন দে, শিক্ষারত্ন পুরস্কার প্রাপ্ত শিক্ষক অরুণ কুমার পাত্র, গবেষক ড. সৌরভ দুয়ারী, শিক্ষক সুভাষ হাজরা প্রমুখ। প্রদর্শনীতে স্বাধীনতা সংগ্রামে আমতা ও বাগনান এলাকার ভূমিকার কথা তুলে ধরা হয়েছে। প্রদত্ত হয়েছে এই এলাকার স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সচিত্র পরিচিতি। প্রদত্ত হয়েছে গ্রাম ধরে ধরে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের নাম। কিছু দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থ প্রদর্শনীতে ঠাঁই পেয়েছে। মাঝে মাঝে আছে আলোচনা ও কুইজ। প্রদর্শনী ঘিরে বিদ্যালয়ের ছাত্রীদের মধ্যে খুব উৎসাহ লক্ষ্য করা গেছে। অনেকেই জানত না, বুড়ি বালামের তীরে বাঘা যতীন যে মাউজার পিস্তল নিয়ে  ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী  লড়াই চালিয়ে ছিলেন তা আসলে আমতার রস পুরের এক বিপ্লবীর লুন্ঠন করা অস্ত্র। 

তিনি হলেন রডা কোম্পানির অস্ত্র লুন্ঠনের মূল কারিগর হাবু মিত্র ওরফে শ্রীশচন্দ্র মিত্র। বুড়ি বালামের তীরে  লড়াইয়ের আগে বাঘা যতীন আত্মগোপন করেছিলেন  পুরানো বাগনান হাইস্কুলে। ১৯৪৭- এর ১৫ আগষ্ট বাগনান থানায় ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন স্বাধীনতা সংগ্রামী চন্ডীদাস ঘোষ। অরবিন্দ ঘোষ বাগনানের বাইনানে দু-দিন ছিলেন বিপ্লবের অগ্নিমন্ত্রে তরুণদের দীক্ষিত করতে। বাগনানে জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন নেতাজী সুভাষ, গান গেয়েছিলেন বিদ্রোহী কবি নজরুল, আত্মগোপন করেছিলেন মাস্টারদা সূর্য সেন। আমতার স্বাধীনতা সংগ্রামী পুলিনবিহারী রায় লাহোরে গিয়েছিলেন লাহোর জেলে বন্দী ভগৎ সিং-কে জেল ভেঙে উদ্ধার করতে। তিনি অবশ্য ব্রিটিশ পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান। টিটাগড় ষড়যন্ত্র মামলায় অন্যতম মূল অভিযুক্ত আমতার আনুলিয়ার কার্তিক সেনাপতি। আমতা-বাগনান এলাকার একমাত্র জীবিত স্বাধীনতা সংগ্রামী হলেন চন্ডীচরণ দাস। এরকম অজস্র অজানা ঘটনা উঠে এসেছে প্রদর্শনীতে।

Share This Article
Leave a Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *