বিশ্বজিৎ বিশ্বাস, নদীয়াঃ নদীয়ার কৃষ্ণনগর জেলা সদর হাসপাতালের বেহাল চিকিৎসা ব্যবস্থা। চিকিৎসা পরিষেবা না মেলায় দিনের পর দিন একাধিক শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটছে কৃষ্ণনগর জেলা সদর হাসপাতালে। অভিযোগ উঠছে ঠিকঠাক ডাক্তারি পরিষেবা মিলছে না, মিলছে না ঔষধ পরিষেবা। শিশুর পরিস্থিতি কেমন রয়েছে তা জানতে গেলে হেনস্তা হতে হচ্ছে ডাক্তার ও নার্সদের কাছে পরিবারের সদস্যদের। হাসপাতালের বাইরে থেকে ঝাঁ-চকচকে দেখা গেলেও ফিমেল ওয়ার্ড ও শিশু বিভাগ রয়েছে অপরিষ্কার ও পরিষেবা হীন। তাছাড়াও অপরিষ্কার রয়েছে শৌচালয়। যেকোনো মুহূর্তে অপরিষ্কার শৌচালয়ে দুর্ঘটনা ঘুরতে পারে প্রসূতি রোগীর ক্ষেত্রে। নদীয়া জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রোগীদেরকে নিয়ে আসা হয় কৃষ্ণনগর জেলা সদর হাসপাতালে। মূলত দরিদ্র সীমার নিচে বসবাসকারী মানুষেরা ছুটে আসেন চিকিৎসার আশায়। আর দরিদ্র মানুষগুলো বঞ্চিত হচ্ছে সরকারি চিকিৎসা ব্যবস্থা থেকে। মিলছে না ডাক্তারের পরিষেবা না মিলছে নার্সের পরিষেবা। জানতে গেলে হেনস্তার মুখে পড়তে হচ্ছে এই দরিদ্র মানুষগুলোকে।
দিনের পর দিন রোগী ভর্তি থাকলেও মিলছে না চিকিৎসা এমনই অভিযোগ করছেন রোগীর পরিবার। প্রসূতি রোগীকে ভর্তি করতে আসলে ভর্তি করার কোনো হেলদোল নেই জরুরী বিভাগে কর্মরত নার্স বা ডাক্তারের। ঘন্টার পর ঘন্টা জরুরী বিভাগে অপেক্ষা করতে হচ্ছে প্রসূতি রোগীকে। আর সেখানেই প্রসব হয়ে যাচ্ছে প্রসূতি মায়েদের। কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীর কুরুচিকর মন্তব্য শুনতে হচ্ছে প্রসূতি রোগীকে। এ বিষয়ে বারংবার হসপিটাল আধিকারিককে অভিযোগ করলেও সে বিষয়ে কর্ণপাত করছে না হাসপাতাল আধিকারিক। এই কয়েক দিনেই একাধিক শিশুর মৃত্যু তা নিয়ে কোনো হেলদোল নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। জানতে চাইলেও সদুত্তর মিলছে না। ধুবুলিয়া পলাশী থেকে শুরু করে ধানতলা বগুলা একাধিক জায়গা থেকে চিকিৎসার আশায় রাতের পর রাত হসপিটালের বাইরেই অপেক্ষারত রোগীর পরিবারের পরিজনেরা। হসপিটালের সামনে অপেক্ষা করলেও জানতে পারছে না অসুস্থ শিশুটি বা রোগীর শারীরিক অবস্থা কেমন আছে।
একাধিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রোগীদের পরিবারের লোকজন কৃষ্ণনগর সদর মড়ে রাস্তা অবরোধ করে দীর্ঘক্ষন বিক্ষোভ করে। সেখান থেকে বিক্ষোভ তুলে দিলে প্রসূতি রোগীকে নিয়ে রাতের অন্ধকারেই পথ অবরোধ করে কালেকট্যারি মোড়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। সেখানে বিক্ষোভ তুলতে গিয়ে রোগীর পরিবারের উপর অত্যাচার চালায় কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানার আইসির নেতৃত্বে পুলিশ প্রশাসন। মারধর করে টেনে হেঁচড়ে তোলা হয় চার দিনের সদ্য শিশু হারানো পিতাকে। সেই চিত্র সংগ্রহ করতে গিয়ে কোতোয়ালি থানার আইসির হুমকির মুখে পড়তে হয় সংবাদকর্মীদের। প্রশ্ন উঠছে এই দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে ছেলেখেলা করছেন চিকিৎসকরা। সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসা না করে প্রাইভেট চেম্বারে অর্থের বিনিময় চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন ডাক্তাররা, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করার সময় তারা পাচ্ছেন না, এমনই অভিযোগ বিক্ষোভকারীদের। এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে শিশু ও মায়ের চিকিৎসা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন তবে কি দরিদ্র মানুষের জন্য পরিষেবা নেই বিনামূল্যে সরকারি চিকিৎসা কেন্দ্রে। রাজ্য সরকার একাধিক বার বিনামূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা নিয়ে ঘোষণা করেছিলেন। তবে প্রশ্ন সেই পরিষেবা কোথায়? এই হসপিটাল গুলোর প্রতি কী সরকারের কোনো নজরদারী নেই ?
Social