Breaking News

যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার জ্বালানি তেলের অনিয়ন্ত্রিত মূল্যবৃদ্ধির দায়িত্ব এড়াতে পারে না

 ড.গৌতম পালঃ পরিশোধিত জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণ না থাকায় ভারতে জ্বালানি তেলের (মূলত পেট্রোল ও ডিজেলের) মূল্য বিদ্যুৎগতিতে বাড়ছে। মুক্ত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থায় তেল কোম্পানিগুলি বহির্বিশ্ব থেকে আমদানিকৃত অপরিশোধিত তেলের (ক্রূড অইল্-এর) মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্য নির্ধারণ করছে (যদিও অন্যান্য অনেকগুলি শর্ত তেলের মূল্য নির্ধারণের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত)। সরকারি কোষাগারের উপার্জন বাড়ানোর লক্ষ্যে বিক্রিত পেট্রোল ও ডিজেলের উপর শুধুমাত্র শুল্ক (ট্যাক্স) চাপিয়েই সরকার তার সাংবিধানিক দায়িত্ব শেষ করছে এবং কুম্ভীরাশ্রু নিক্ষেপ করছে। মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, কর্নাটক, পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি এবং মধ্যপ্রদেশে ইতিমধ্যেই প্রতি লিটার পেট্রোলের মূল্য ১০০ টাকা (১০২-১০৭ টাকা) প্রতি লিটার অতিক্রম করেছে এবং অন্যান্য রাজ্যেও প্রতি লিটার পেট্রোলের মূল্য ১০০ টাকার উপকণ্ঠে রয়েছে (উত্তরপ্রদেশে প্রতি লিটার পেট্রোলের মূল্য ৯৭ টাকা, উত্তরাখণ্ডে ৯৭ টাকা)। ডিজেলের মূল্যও পেট্রোলের মতো অতিদ্রুত ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। প্রতি লিটার ডিজেলের বিক্রয়মূল্য ইতিমধ্যেই ৯০ টাকা ছাড়িয়েছে (৯১ টাকা থেকে ৯৮ টাকার মধ্যে রয়েছে)। উল্লেখ্য, জ্বালানি তেল উৎপাদনে আমাদের দেশ ভারতবর্ষ কিন্তু পুরোপুরি আত্মনির্ভরশীল নয়। ভারতে জ্বালানি তেলের মোট চাহিদার প্রায় ১৮ শতাংশ পূরণ করা হচ্ছে দেশের অভ্যন্তরীণ উৎপাদন থেকে এবং অবশিষ্ট ৮২ শতাংশ চাহিদার যোগান আসছে বহির্বিশ্ব থেকে অপরিশোধিত তেলের আমদানির মাধ্যমে। সূতরাং, আমদানী করা (বা বহির্বিশ্ব থেকে ক্রয় করা) জ্বালানি তেলের কার্যকরী ব্যবহার এবং মূল্য নির্ধারণ নিয়ন্ত্রণে ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের যে পটুতা থাকা দরকার, তা এই মুহূর্তে দেখা যাচ্ছে না। শুধু তাই নয়, জ্বালানি তেলের টেকসই ব্যবস্থাপনের (স্যাস্টেইন্যাবল্ ম্যানেজ্মেন্ট্-এর) কোনো নীতি যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার আজ পর্যন্ত প্রণয়ন করেনি। সরকারের উদাসীনতা এবং নাগরিকদের অসচেতনায় আগামী দশকগুলিতে ভারতবর্ষে জ্বালানি তেলের যে অভূতপূর্ব সংকট তৈরি হতে চলেছে এবং তার ফলে যে অর্থ-সামাজিক বিপর্যয় নেমে আসতে চলেছে তার একটি রূপরেখা দেবার চেষ্টা করলাম এই প্রবন্ধের মাধ্যমে। 

২০১৯ খ্রিস্টাব্দের শেষ পর্যন্ত সমগ্র বিশ্বে উৎপাদনযোগ্য অপরিশোধিত তেলের মোট পরিমাণ প্রায় ১.৭৩ (এক দশমিক সাত তিন) লক্ষ কোটি ব্যারেল্ (উল্লেখ্য একটি ব্যারেল্-এর মধ্যে ১৫৯ লিটার তেল থাকে)। উক্ত মোট সঞ্চয়ে ভারতের অবদান মাত্র ০.৩ শতাংশ (অপরিশোধিত তেল সঞ্চয়ের নিরিখে বিশ্বের মধ্যে ভারতের স্থান ২৪ তম)। অবতরণ ক্রম অনুসারে বিশ্বের প্রথম ১০ টি অপরিশোধিত জ্বালানি তেল সঞ্চয়কারী দেশগুলি হলো যথাক্রমে – ভেনেজুয়েলা (সঞ্চয়ের পরিমাণ ৩০৪০০ কোটি ব্যারেল্), সৌদি আরব (২৯৮০০ কোটি ব্যারেল্), ক্যানেডা (১৭০০০ কোটি ব্যারেল্), ইরান (১৫৬০০ কোটি ব্যারেল্), ইরাক (১৪৫০০ কোটি ব্যারেল্), রাশিয়া (১০৭০০ কোটি ব্যারেল্), কুয়েত (৯০২০০ কোটি ব্যারেল্), সংযুক্ত আরব আমিরাত (৯৮০০ কোটি ব্যারেল্), অ্যামেরিকা যুক্তরাষ্ট্র (৬৯০০ কোটি ব্যারেল্), এবং লিবিয়া (৪৮০০ কোটি ব্যারেল্)। ২০১৮ পর্যন্ত ভারতে উৎপাদনযোগ্য অপরিশোধিত তেলের মোট সঞ্চয় রয়েছে মাত্র ৪১৬ কোটি ব্যারেল্। উক্ত সঞ্চয়ের প্রায় ৯৬ শতাংশ রয়েছে আসাম, গুজরাট, এবং রাজস্থানের উপকূলীয় (অনশোর), এবং মুম্বাই হাই সমুদ্রতীরাতিক্রান্ত (অফশোর) তেল ভান্ডারে।

বিশ্বে মোট সঞ্চিত অপরিশোধিত তেলের সিংহভাগ ভোগ করছে (বা খরচ করছে) মূলত চারটি দেশ — অ্যামেরিকা যুক্তরাষ্ট্র (২০.৩১ শতাংশ), চীন (১৩.২ শতাংশ), ভারত (৪.৬ শতাংশ) এবং জাপান (৪.১ শতাংশ)। উল্লেখ্য, ভারতে বর্তমানে প্রতিদিন অপরিশোধিত তেলের চাহিদা রয়েছে প্রায় ৪৪.৪৩ লক্ষ ব্যারেল্-এর। দেশে অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ব্যতিরেকে (বা যোগান বাদ দিয়ে) প্রতিদিনের ঘাটতি রয়েছে প্রায় ৩৪.২৬ লক্ষ ব্যারেল্-এর। এই বিপুল ঘাটতির পুরোটাই কিনতে হয় বহির্বিশ্বের তেল সমৃদ্ধ দেশ থেকে দেশের চাহিদা পূরণের জন্য। আমদানিকৃত তেলের প্রায় ৮৬ শতাংশ সরবরাহ করছে তেল রপ্তানিকারী রাষ্ট্রপুঞ্জ (ইরান, ইরাক, কুয়েত, সৌদি আরব এবং ভেনেজুয়েলা), সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং নাইজেরিয়া। নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতার অভাবে এবং ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের বিধিনিষেধ বা নিয়ন্ত্রণের শৈথিল্যে পেট্রোল এবং ডিজেলের প্রাত্যহিক চাহিদা যেমন বিদ্যুৎগতিতে বাড়ছে, তেমনই বিদ্যুৎগতিতে মূল্যবৃদ্ধি ঘটছে পেট্রোল ও ডিজেলের। উল্লেখ করা যেতে পারে, সমগ্র বিশ্বে পুনরায় যদি নতুন কোনো তেল ভান্ডার আবিষ্কৃত না হয় এবং বর্তমান খরচ (ক্যানসাম্পশন) বজায় থাকে তাহলে আগামী ৪৭ বছরের মধ্যে বিশ্বের অপরিশোধিত তেলের মোট সঞ্চয় সম্পূর্ণরূপেই নিঃশেষ হয়ে যাবে। যদিও ভারতের মোট সঞ্চয় তার অনেক আগেই ফুরিয়ে যাবে। 

ভারতে পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্য নির্ধারণের বাস্তবতা আলোচনা করা দরকার মূল্য সংক্রান্ত অভিমত প্রকাশের পূর্বে। প্রতি লিটার পেট্রোল বা ডিজেলের মূল্য নির্ধারিত হয় অনেকগুলি শর্তকে বিবেচনা করে। এই শর্তগুলি হলো — আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের মূল্য বা খরচ বাবদ ব্যয়, ডিলারদের জন্য নির্ধারিত মূল্য, ডিলারদের কমিশন বাবদ ব্যয়, কেন্দ্রীয় আবগারি শুল্ক, বিক্রয়কর বা ভ্যাট (ভ্যালু অ্যাডেড্ ট্যাক্স), সরকার আরোপিত কর (যুক্তরাষ্ট্রীয় এবং প্রাদেশিক), পেট্রোল বা ডিজেলের চাহিদা, পরিশোধনাগারের (রিফাইন্যারির) খরচ অনুপাত এবং পরিবহনজনিত খরচ, ইত্যাদি। পরিবহনজনিত ব্যয় এবং প্রাদেশিক সরকার আরোপিত শুল্কের ভিন্নতার জন্যই ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে পেট্রোল বা ডিজেলের প্রতিলিটার দামের মধ্যে কিছুটা ফারাক তৈরি হচ্ছে। সমগ্র বিশ্বের নিরিখে প্রতি লিটার পেট্রোল বা ডিজেলের বর্তমান মূল্য সবচেয়ে বেশি হংকং-এ, এবং পেট্রোল বা ডিজেল সবচেয়ে সস্তা ভেনেজুয়েলায়। উল্লেখ্য, প্রতি লিটার পেট্রোল বা ডিজেলের মূল্য অনুসারে সমগ্র বিশ্বে ভারতের অবস্থান ৫৮ তম স্থানে। 

শুনতে অবাক লাগবে যে, প্রতি লিটার পেট্রোলের খুচরো মূল্যের প্রায় ৬০ শতাংশ এবং ডিজেলের খুচরো মূল্যের প্রায় ৫৪ শতাংশ (প্রতি লিটারের মোট মূল্যের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ) হলো যুক্তরাষ্ট্র এবং প্রাদেশিক সরকারের সম্মিলিত শুল্ক বা কর। অর্থাৎ ১ লিটার পেট্রোলের বর্তমান বিক্রয়মূল্য যদি ১০০ টাকা হয়, তাহলে ক্রেতাকে ১ লিটার পেট্রোল ক্রয় করার সময় ১০০ টাকার মধ্যে ৬০ টাকা যুক্তরাষ্ট্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারকে শুল্ক বা কর বাবদ ব্যয় করতে হয়। বর্তমানে প্রতি লিটার পেট্রোলের মোট মূল্যে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের মোট শুল্ক বা কর (আফগারি শুল্ক) আরোপিত থাকে প্রায় ৩৩ টাকা (ডিজেলের ক্ষেত্রে প্রায় ৩২ টাকা) এবং প্রাদেশিক বা রাজ্য সরকারের শুল্ক আরোপিত থাকে প্রায় ২০ টাকা। অথচ জ্বালানি তেল সরকারি নিয়ন্ত্রণ মুক্ত হওয়ায় আগে পর্যন্ত প্রতি লিটার পেট্রোল বা ডিজেলের মোট মূল্য নির্ধারণে সরকারের শুল্ক ছিল গৌণ এবং অপরিশোধিত তেলের ক্রয় মূল্য ছিল মুখ্য। এই কারণেই আগের নিয়মে পেট্রোল বা ডিজেলের প্রতি লিটারে বিক্রয়মূল্য ছিল অনেক কম (যথা–১৯৯০ সালে প্রতি লিটার পেট্রোলের মূল্য ছিল ১২.২৩ টাকা এবং ১৯৯১ সালে ছিল ১৪.৬২ টাকা)। সূতরাং দাম নির্ধারণে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের ক্রয়মূল্যকে মুখ্য শর্ত হিসাবে বিবেচনা করলে এবং সরকারি শুল্ক যুক্তিসঙ্গত করলে প্রতি লিটার পেট্রোল বা ডিজেলের বিক্রয়মূল্য বর্তমান মূল্যের অর্ধেক হয়ে যাবে। অর্থাৎ বর্তমানে প্রতি লিটার পেট্রোল ৫০ টাকায় এবং ডিজেল ৪৫ টাকায় কেনা যাবে। অথচ যুক্তরাষ্ট্র সরকার চোখ বন্ধ করে রয়েছে বেশি রাজস্ব উপার্জনের জন্য। জ্বালানি তেলের দাম বাড়লেও এই সংক্রান্ত কোনো নীতি প্রণয়ন করছে না, কেবল আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধির অজুহাত দেখিয়ে দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে। 

শক্তিই মানব সভ্যতার চালক। জীবাশ্ম জ্বালানি (কয়লা, পেট্রোলিয়াম, প্রাকৃতিক গ্যাস) প্রথাগত শক্তির প্রধান উৎস। ভারতে কয়লা যথেষ্ট সঞ্চিত থাকায় কয়লা নির্ভর তাপবিদ্যুৎ উৎপাদনে ভারত যথেষ্ট আত্মনির্ভরশীল। কিন্তু পেট্রোলিয়ামের সঞ্চয় ভারতের অতি–নগণ্য হওয়ায় জ্বালানি তেল উৎপাদনের জন্য ভারতকে বিদেশ থেকে আমদানিকৃত পেট্রোলিয়ামের (অপরিশোধিত তেল বা ক্রূড্ অইল্) উপর মূলত নির্ভর করতে হয়। অর্থাৎ জ্বালানি তেল (পেট্রোল এবং ডিজেল) উৎপাদনে ভারতে কখনোই স্বনির্ভর নয়। অথচ মোটরগাড়ির ইন্ধন হিসাবে, জেনারেটরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদনে, কৃষি উৎপাদনে, কৃষিজ ও শিল্পজাত পণ্যের পরিবহনে এবং রেলগাড়ির ইঞ্জিনের ইন্ধন হিসাবে জ্বালানি তেল অপরিহার্য। এই কারণে জ্বালানি তেলের মূল্য বাড়লে কেবল পরিবহন ব্যবস্থাই (ব্যক্তিগত ও গণ পরিবহন) সংকটে পড়বে তাই নয়, কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হবে, কৃষিজ পণ্য ও শিল্পজাত পণ্যের পরিবহন বাবদ ব্যয় বহুগুণ বাড়বে এবং তার ফলে নিত্য-প্রয়োজনীয় ব্যবহারিক পণ্য এবং খাদ্যপণ্যের মূল্য সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাবে। দেশের জিডিপি-এর বৃদ্ধি অনিবার্যভাবে শ্লথ হবে। ফলে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিতে (বা জ্বালানি তেলের অভাবে) ভারতে ভয়াবহ অর্থ-সামাজিক (স্যাউসিঅ্যাউ-ইক্যানমিক্) সংকট তৈরি হবে। 

এই মুহূর্তেই ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারকে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এন আই টি আই আয়োগ বা পেট্রোলিয়াম মন্ত্রককে জ্বালানি তেলের ব্যবহার এবং মূল্যবৃদ্ধি সংক্রান্ত নীতি প্রণয়ন করতে হবে আশু অর্থ-সামাজিক বিপর্যয় এড়াতে। মূল্যবৃদ্ধি কমাতে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারকে জ্বালানি তেলের উপর আরোপিত আফগারি শুল্ক বর্তমান মূল্যের এক-চতুর্থাংশ করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকার শুল্ক কমালে প্রাদেশিক সরকারও জ্বালানি তেলের উপর শুল্ক কমাতে বাদ্য হবে। শুধু শুল্ক কমিয়ে জ্বালানি তেলের খুচরো মূল্য দীর্ঘদিন কমিয়ে রাখা যাবে না। শুল্ক কমানোর সঙ্গে সঙ্গে জ্বালানি তেলের অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার কমিয়ে বহির্বিশ্ব থেকে চড়া দামে কেনা অপরিশোধিত তেলের আমদানির পরিমাণ কমাতে

 হবে। জ্বালানি তেলের সাশ্রয় বাড়ানোর জন্য (এবং অপচয় হ্রাস করার জন্য) সাধারণ নাগরিক, সরকার ও মোটরযান নির্মাতা শিল্প সংস্থাকে অধিক দায়িত্ব সচেতন হতে হবে। অপ্রয়োজনীয় কারণে ব্যক্তিগত মোটরযানের ব্যবহার হ্রাস করতে হবে। যাতায়াতের জন্য গণ-পরিবহন ব্যবস্থার (বাস, ট্রাম, মেট্রো বা ভূতল ট্রেন পরিবহন) সুযোগ বেশি পরিমাণে নিতে হবে সবাইকে। এগুলি বাস্তবায়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রীয় ও প্রাদেশিক সরকারকে বিধি বলবৎ করতে হবে। জ্বালানি তেল সাশ্রয়ের জন্য মোটরযান নির্মাতা শিল্প-সংস্থাগুলিকে অধিক ইন্ধন সাশ্রয়ী মোটরযানের উদ্ভাবন ঘটাতে হবে (সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি মোটর গাড়ি ইন্ধন সাশ্রয়ের সঙ্গে বায়ুকেও কম দূষিত করবে) । জ্বালানি তেলের ব্যবহার বিপুল পরিমাণে হ্রাস করা যেতে পারে মোটর যানগুলিতে ইন্ধন হিসাবে বিদ্যুৎশক্তিকে বা সৌরশক্তিকে ব্যবহার করতে পারলে।

জ্বালানি তেলের ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির ঘটনাকে অত্যন্ত হালকাভাবে নিলে চলবে না। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি প্রসূত আশু অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিপর্যয় এড়াতে যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারকে অনতিবিলম্বেই দীর্ঘমেয়াদী কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারকে জ্বালানি তেলের সাশ্রয়ী ব্যবহার ও মূল্য সংক্রান্ত একটি সুসংহত নীতি প্রণয়ন করতে হবে। অতি-সত্বর ব্যবস্থা না নিতে পারলে আগামী প্রজন্ম আমাদের ক্ষমা করবে না। সর্বোপরি দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্যই জ্বালানি তেলের অনিয়ন্ত্রিত মূল্যবৃদ্ধি রোধ করা প্রয়োজন।

লেখক: সহ-উপাচার্য, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়।

About Burdwan Today

Check Also

“পশ্চিমবঙ্গ এখন দালালদের ভূস্বর্গ হয়ে উঠেছে”, বর্ধমানে এসে এমনই মন্তব্য করলেন ডাঃ সত্যজিৎ বসু

টুডে নিউজ সার্ভিস, বর্ধমানঃ পশ্চিমবঙ্গ এখন দালালদের ভূস্বর্গ হয়ে উঠেছে বর্ধমানের এসে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *